অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেল শিক্ষার্থীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি ফারদিন ইফতেফার দিহানের (১৮) বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এর আগে রোববার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান আসামি দিহানের ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি প্রার্থনা করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
কলাবাগান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক স্বপন কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালতে দিহান দায় স্বীকার করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এছাড়া ওই দিনই নিহত ছাত্রীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ফলে যৌন ও পায়ুপথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে কিনা, তার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে কেমিক্যাল পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।’
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৭ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হয়ে যান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার পেপারস আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।
পরে মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী দিহান দুপুর আনুমানিক ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে জানান, মেয়েটি তার বাসায় গিয়েছিলেন। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। অফিস থেকে বের হয়ে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে ভুক্তভোগীর মা হাসপাতালে পৌঁছান।
হাসপাতালের কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তার কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মারা যান।