কে এম রেজাউল করিম, দেবহাটা : বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক জ্ঞান অহরণের অন্যতম মাধ্যম হল সংবাদপত্র। পাঠক সহজে বিভিন্ন তথ্য ও সহজলভ্য জ্ঞান পেয়ে থাকেন সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে। তাছাড়া বর্তমান সমাজের প্রায় প্রতিটা মানুষ সংবাদ মাধ্যমের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত। ঠিক এই মহাত জ্ঞানের আলো ছড়ানোর কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন যিনি, যার নিজের চোখের আলো না থাকলেও অন্যোর চোখে আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছেন তিনি। তেমনই একজন জন্মান্ধ ভিক্ষা না করে সৎ পথে উপার্জন করে অন্যের চোখে আলো জালানোর দায়িত্ব নিয়ে নিরালসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সে উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের সৈয়দ আলীর পুত্র উপজেলার কুলিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান(৪৭)। জন্ম অন্ধ হওয়ায় ভাগ্যোর চাকা ঘুরাতে না পারলেও বেঁচে থাকার তাগিদে ভিক্ষার পরিবর্তে পত্রিকা বিলি করে অর্থ উপার্যন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। তিনি প্রতিদিন ৪/৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে কুলিয়া হতে পারুলিয়া বাসস্টান্ডে পত্রিকা নিতে। পারুলিয়া হতে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকা নিয়ে পারুলিয়া গরুরহাট, সেকেন্দ্রা, কুলিয়া, বহেরাসহ আশেপাশে এলাকায় বিলি করতে করতে বাড়িতে ফেরেন। তিনি রাস্তাদিয়ে চলার সময় কিছুটা অনুমান বা আন্দাজ করে মানুষের বাড়িতে, দোকানে পত্রিকা বিলির কাজ করেন।
জন্ম অন্ধ হওয়ায় রাস্তায় চলার সময় জীবনের ঝুঁকি থাকলেও সবকিছু উপেক্ষা করে প্রতিদিনের পত্রিকা মানুষের কাছে পৌছে দেন। ঝড়, বৃষ্টি, রৌদ্র সবকিছু মধ্যে একজন জন্ম অন্ধের পক্ষে খুব এ কাজ দূরাহ ব্যাপার। তার পরেও সত্যকে ছড়িয়ে দিতে নিবেদিত প্রাণ হাবিবুরের অসাধ্য দেখে প্রতিবন্ধী কথাটি হার মানাচ্ছে। পত্রিকা বিলির মাধ্যমে সামান্য অর্থ পেয়ে খুব কষ্টের মধ্যে স্ত্রী, ১পুত্র ও এক কন্যার সংসার পরিচালনা করতে হয় তাকে। তিনি কোন ব্যক্তির দান বা অনুগ্রহ না নিয়ে নিজে পরিশ্রম করে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কেবলমাত্র উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সামান্য ভাতা ছাড়া তেমন কিছু আর্থিক সহায়তা গ্রহন করেন।
হাবিবুর রহমান জানন, আমি সর্বদা চাই পাঠকের হাতে সময় মত পত্রিকা পৌঁছে দিতে। আমার চলার পথে অনেক সমস্যা হয় কিন্তু কি করব ভিক্ষা না করে সৎ পথে উপার্জন করে শান্তি পায়। হাবিবুর রহমানে মত এমন একজন জন্ম অন্ধ হয়ে এ অসাধ্য কে সাধ্য করে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর মহানুভব দায়িত্ব পালন করায় তার কর্মকান্ডকে স্বাধুবাদ জানানিয়েছে।