বিদেশের খবর : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করেছে। করোনা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ও চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ বাস্তবায়নে কাজ করে যাওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তিনি বলেন, চায়না ও বাংলাদেশ সর্বদাই বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী। আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি এবং একসঙ্গে উন্নয়ন করছি। আজ উভয় দেশই উন্নয়ন জোর দিয়েছি। চীনের স্বপ্নের সঙ্গে সোনার বাংলার স্বপ্ন গভীরভাবে সম্পৃক্ত।’
বুধবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে আমি বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছিলাম। তখন আমি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক উন্নয়নে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম। সে সময় দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড চুক্তিতে সই করেছে।’
করোনা মোকাবিলায়ও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করেছে উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, ‘করোনা মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড বাস্তবায়নে কাজ করে যাওয়া প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এমন মাহেন্দ্রক্ষণে চীন সরকার ও তার জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান শি জিনপিং। তিনি বলেন, ‘৫০ বছর আগে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করেন। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে তিনি সারাজীবন নিবেদিত ছিলেন। তাকে আজ সারাদেশের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে।’
‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ বাংলাদেশের এই পররাষ্ট্রনীতিরও প্রশংসা করেন চীনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব ছিলেন চীনা জনগণের পুরাতন ও ভালো বন্ধু। তিনি ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফরে গিয়েছিলেন। আধুনিক চীনের জনক মাও সেতুং ও ওই সময়ের চীনের অন্য নেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু।’
শি জিনপিং বলেন, ‘স্বাধীনতার পর পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের জনগণ একের পর এক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এসেছে। প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় তাদের সাফল্য আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। প্রতিবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি এবং তা অব্যাহত আছে। সরকার তার জনগণের জন্য সংগ্রাম করছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখছে। উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র্য কমিয়েছে। বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে চীন বাংলাদেশের এই সাফল্যে আনন্দিত। চায়না ও বাংলাদেশ সর্বদাই বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী। আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি এবং একসঙ্গে উন্নয়ন করছি। আজ উভয় দেশই উন্নয়ন জোর দিয়েছি। চীনের স্বপ্নের সঙ্গে সোনার বাংলার স্বপ্ন গভীরভাবে সম্পৃক্ত।’
চীনের রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে চীনা কোম্পানি। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ পণ্য চীনে শুল্কমুক্ত সুবিধাভোগ করছে। আমি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। উভয় দেশের উন্নয়ন কৌশলগুলো আরও জোরালো করতে আমি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করব। আমি বাংলাদেশের সাফল্য এবং বাংলার মানুষের সুখশান্তি কামনা করে শেষ করছি।’