অনলাইন ডেস্ক : কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছেলেমেয়েদের টিকা দেওয়া গেলে তাড়াতাড়ি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। এ ছাড়া এ বন্ধের মধ্যে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৪০টির সংস্কার শুরু হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এদিকে সরকার শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করলেও করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ভারতের আমাদের তিন কোটি করোনার টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা পেয়েছি ৭০ লাখ। ফলে আমরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে চিন্তায় আছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে টিকা আমদানির বিষয়ে যোগাযোগ করছি। দ্বিতীয় ডোজের জন্য ভারত ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চেষ্টা করেছেন। আগামী ২৫ মে থেকে চীনের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হবে। এ টিকাগুলো বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে চীন। এ ছাড়াও চীন থেকে বাংলাদেশ টিকা কিনবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
দেশে টিকা তৈরির উদ্যোগের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেকোনো ভ্যাকসিন তৈরি করতে হলে ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন লাগে। যেসব প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। উৎপাদনে গেলেও পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগতে পারে। এ জন্য আমরা আপাতত জরুরি প্রয়োজনে টিকা কিনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাদের উৎপাদনের সক্ষমতা আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমে তাদের আবেদন দেখে আমাদের কাছে আসতে হবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সেরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জাহিদ মালেক বলেন, সরকারের সময় মতো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই করোনায় এখনো বাংলাদেশ অনেকটাই নিরাপদ রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে দিনে গড়ে প্রায় চার হাজার মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছে এবং দৈনিক তিন থেকে চার লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। অথচ ভারতের এত নিকটবর্তী দেশ হয়েও আমাদের দেশে বর্তমানে সংক্রমণ দিনে ৩০০ জনের কাছাকাছি নেমে গেছে। ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেশে চলে এলেও তাদের সঠিকভাবে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করার ফলে ভ্যারিয়েন্টটি দেশে এখনো ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। তবে, আগামী কিছুদিন আমাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। ঈদ শেষে মানুষ যেন আগামী কিছুদিন ঢাকায় ফিরতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হবে। পাশের দেশ ভারতের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে সব রকম সীমান্ত বন্ধ রাখতে হবে।