স্বাস্থ্য ও জীবন : ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান, তাই তো পুষ্টিবিদরা খাদ্যতালিকায় এ ভিটামিন রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কিন্তু কতটা পরিমাণ ভিটামিন সি খাবেন? অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খেলে শরীরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
ভিটামিন সির কাজ :
ভিটামিন সি, যার আরেক নাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এটি ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়ে। এ ছাড়া হাড় ও দাঁতের জন্য এটি অনেক উপকারী এবং ত্বকের টিস্যুর গঠনেও এটি সরাসরি অংশ নেয়।
যে কোনো ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সারাতে এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিক্যাল থেকেও রক্ষা করে এটি। সারিয়ে তোলে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুও।
শরীরে কতটুকু ভিটামিন সি প্রয়োজন :
স্বাস্থ্যবিদদের মতে, ১৯ বছরের বেশি বয়সি পুরুষের ক্ষেত্রে দিনে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা প্রয়োজন। নারীদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৭৫ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া গর্ভকালীন অবস্থায় বা শিশুকে স্তন্যদানের সময় দিনে ৮৫ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া প্রয়োজন। আবার ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এই ভিটামিনটি বেশি খাওয়া জরুরি। কারণ ধূমপান করলে শরীরে ভিটামিন সি কমতে থাকে।
ভিটামিন সির ঘাটতি যেভাবে পূরণ হবে :
মূলত ফল ও কাঁচাসবজি থেকে ভিটামিন সির ঘাটতি পূরণ হয়। ফল ও সবজি কাঁচা খেলে ভিটামিন যথেষ্টভাবে শরীর গ্রহণ করে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন শাকেও প্রচুর পরিমাণে এ ভিটামিন থাকে। তবে বেশিক্ষণ রান্না করার ফলে যে কোনো সবজি তার পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে। অতিরিক্ত তাপ ভিটামিনের রাসায়নিক গঠন ভেঙে দেয়। তবে অনেক সময় রান্না করা তরকারির ঝোলে ভিটামিন থেকে যায়। এ জন্য ভিটামিন সির ঘাটতি পূরণে সবজি কাঁচা অবস্থাতেই খাওয়ার পরামর্শ দেন বিষেশজ্ঞরা।
অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীরে যে প্রভাব ফেলে :
শরীরের অতিরিক্ত ভিটামিন স্বাভাবিকভাবেই মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। তবে ভিটামিন সি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে শরীরে ভিটামিন শোষণ ক্ষমতা কমে আসে। এ ছাড়া কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। যেমন—
১. ডায়রিয়া
২. বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি হওয়া
৩. বুক জ্বালাপোড়া করা
৪. তলপেটে অতিমাত্রায় ব্যথা হওয়া
৫. মাথাব্যথা
৬. অনিদ্রা
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বা কোন পরীক্ষা ছাড়া ভিটামিন সির সাপ্লিমেন্ট কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না।