অনলাইন ডেস্ক : দুই দশক ধরে শিশুশ্রম বেড়েই চলছে। বিশ্বজুড়ে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ২০২০ সালের ১৬ কোটি অতিক্রম করেছে।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চার বছরে এ তালিকায় যোগ হয়েছে ৮৪ লাখ নতুন নাম, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। আগামী দুই বছরে আরও ৫ কোটি শিশুশ্রমিক বাড়তে পারে।
জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘চাইল্ড লেবার: গ্লোবাল এস্টিমেটস ২০২০, ট্রেন্ডস অ্যান্ড দ্য রোড ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার যৌথভাবে প্রকাশ করে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
প্রতি চার বছর পর প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বিশ্বের মোট শিশু শ্রমিকের অর্ধেকেরই বয়স ৫ থেকে ১১ বছর। এদের বেশির ভাগই ছেলে। ১৬ কোটি শিশু শ্রমিকের মধ্যে ছেলের সংখ্যা ৯ কোটি ৭০ লাখ।
জাতিসংঘ বলছে, করোনাভাইরাস মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট গত এক বছরে আরও কোটিখানেক শিশুকে ঠেলে দিয়েছে একই দুর্ভাগ্যের দিকে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০০০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে শিশু শ্রমিকের তালিকায় নতুন ৯ কোটি ৪০ লাখ নাম যুক্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের পর থেকে ক্রমশ বাড়তে শুরু করে এ সংখ্যা। অর্থাৎ মহামারির আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা মহামারির শুরুর দিকে বিশ্বে প্রতি ১০ শিশুর একজন মজুরিভিত্তিক কাজে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছে। এ চিত্র সবচেয়ে ভয়াবহ আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে।
জাতিসংঘ বলছে, আগের তুলনায় প্রতিবছর নতুন যোগ দেওয়া শিশু শ্রমিকের হার বদলায়নি; বরং ২০১৬ সালের হারই এখনো বিদ্যমান। কিন্তু বৈশ্বিক জনসংখ্যা বেড়েছে বলে হার একই থাকলেও নতুন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা নিঃসন্দেহে বেড়েছে।
মহামারিকাল শিশুদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, আগামী দুই বছরে তালিকায় যুক্ত হতে পারে পাঁচ কোটি শিশু শ্রমিক। এ অবস্থায় নতুন করে দারিদ্র্যের মুখে পড়া লাখ লাখ পরিবারের সহায়তায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে আইএলও ও ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের প্রধান হেনরিয়েত্তা ফোর বলেন, শিশুশ্রম বন্ধের লড়াইয়ে আমরা হারতে বসেছি। করোনাভাইরাস মহামারি আমাদের অনেক পেছনে ঠেলে দিয়েছে। বৈশ্বিক লকডাউন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, অচল অর্থনীতি ও জাতীয় বাজেট সংকোচনের দ্বিতীয় বছর চলছে। এ পরিস্থিতিতে অনেক পরিবারকে বাধ্য হয়ে সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ করে কাজে পাঠানোর কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।