দেশের খবর : রাজধানীর আগারগাঁয়ে সংসদ সচিবালয় কোয়ার্টার থেকে নুসরাত জাহান (২৮) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে প্রতিবেশীদের ফোন পাওয়ার পর বাসার দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে নিহত নুসরাতের স্বামী মামুন মিল্লাত পলাতক রয়েছেন; যিনি পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে বি-২ নম্বর কোয়ার্টারে সাবলেটে নুসরাতকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আদিবাসী নারী নুসরাত পলাতক মামুন মিল্লাতকে বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়। সেখানে তিনি জেলা ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলেন।
প্রতিবেশীদের উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, বেলা ১১টা পর্যন্ত মামুন মিল্লাত বাসায় ছিলেন। এরপর তিনি বাইরে চলে যান। এর ঘণ্টাদেড়েক পর প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করে নুসরাতের আর সাড়া পাননি। সন্দেহ হলে এক প্রতিবেশী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে আগারগাঁও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাসার দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় নুসরাতকে পাওয়া যায়। সিলিং ফ্যান থেকে মরদেহ নামিয়ে বিকেলে তা ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
স্বজনরা পুলিশকে জানিয়েছেন, আদিবাসী নুসরাত ২০১৯ সালে মামুন মিল্লাত নামে ওই যুবককে বিয়ে করেন। ওই সময় তিনি নিজেকে ৩৮তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়েছিলেন। নুসরাত বিয়ের পর জানতে পারেন, মামুন পুলিশ কর্মকর্তা নন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই কলহ লেগে থাকত।
প্রতিবেশীরা বলছেন, শনিবার সকালেও তারা নুসরাত ও তার স্বামীর ঝগড়া শুনেছেন। তারা প্রায় দিনই তা করতেন। গত তিন মাস ধরে ওই দুইজন সাবলেট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন।
শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী বলেন, কিছু কাগজপত্র যাচাই করে ওই নারীর পরিচয় মিলেছে। খাগড়াছড়িতে তার বাবাসহ স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা ঢাকায় এলে বিস্তারিত তথ্য মিলবে। এরপর ওই ঘটনায় মামলা হবে। নুসরাতের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে রয়েছে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পলাতক মামুন মিল্লাত পুলিশের কেউ নন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি প্রতারক। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মামুন মিল্লাতের প্ররোচনায় ওই নারী আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। পলাতক ওই যুবককে গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।