দেশের খবর : বরিশালের উজিরপুরে হত্যা মামলার এক নারী আসামিকে রিমান্ডে যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে সহকারী পুলিশ সুপার ও উজিরপুর থানার ওসিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মমিন উদ্দিন।
মামলায় আসামিরা হলেন সদ্য প্রত্যাহার হওয়া উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম। এছাড়া উজিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এবং অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
পরিদর্শক মমিন উদ্দিন জানান, আদালতের নির্দেশে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে যৌন নির্যাতনের শিকার ওই নারী আসামি মামলাটি করেছেন।
এদিকে, সোমবার সকালে বরিশাল রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এসএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় উজিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে ওসি জিয়াউল আহসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।’
আদালত সূত্র জানায়, গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ী এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর ভাই বরুণ চক্রবর্তী ওই দিনই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় এক নারীকে। যার সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন বরুণ। এই মামলার আসামি হিসেবে ওইদিন সেই নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
থানা পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলি আদালত নারী আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই ওই নারীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তাঁকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান আদালত। ওই নারী আদালতের কাছে তাঁকে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। আদালত একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তাঁর দেহ পরীক্ষা করে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পান। এরপর আদালত তাঁর যথাযথ চিকিৎসা এবং তাঁকে নির্যাতনের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে। জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে ওই নারীকে নির্যাতনে আঘাতের চিহ্নর কথা উল্লেখ রয়েছে।