প্রেস বিজ্ঞপ্তি : নারী নির্যাতন মামলার হাত থেকে বাঁচতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আটুলিয়া দোহার গ্রামের নজরুল ইসলাম সরদারের কন্যা শাহানাজ আক্তার মিরা।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি স্বামী পরিত্যাক্তা হয়ে ২০১৭ সালে সাতক্ষীরা ডক্টরল্যাবে ডাক্তারের সহযোগি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় কালিগঞ্জ উপজেলার সোতা গ্রামের হাজী মুজিবর পাড়ের পুত্র মোহাব্বত আলী আমার পিতা-মাতা বিবাহে রাজি না হলেও কাকুতি মিনতি করে তাদের রাজি করায়। তার প্রথম স্ত্রী আড়াই বছর বয়সী সন্তানকে রেখে মারা যান। পিতা-মাতা তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে কোন কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই আমাকে তার সাথে বিবাহ প্রদান করেন। বিবাহের মাত্র ১৮ দিন পর আমাকে রেখে মহব্বত আলী বিদেশে চলে যান। কিছুদিন পর দেশে ফিরে আবারো চলে যায়। সে সময় বাড়িতে গেলে আমার শ^শুর মজিবুর রহমান পুত্র বাড়ি না থাকার সুযোগে বিভিন্ন সময়ে আমাকে কু প্রস্তাব দিতে থাকে। আমি রাজি না হওয়ায় শ^শুর মেঝ ভাসুরকে দিয়ে আমাকে মারপিট করে। পরে আমাকে বিদেশ নিয়ে যায়। সে সময় আমার গর্ভে তার ঔরসে সন্তান আসে। ১ মাস পর আমাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
তারপর ২০২০ সালের জুন মাসে আমার স্বামী মহব্বত আলী দেশে ফিরে আসে। এর মধ্যে আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। তারপরও স্বামীর পূর্বের সন্তানকে নিজের বড় সন্তান হিসেবে মনে করে পরিচর্যা করতে থাকি। বাড়ি ফিরে আসার পর বিভিন্ন সময়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজসহ মারপিট করতে থাকে। একপর্যায়ে গত ০৭/০৬/২০২১ তারিখে আবারো হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে। গত ১০/০৬/২০২১ তারিখ রাতে স্বামী মহব্বত বলে ‘চল তোমার পিতার বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। আমি সরল বিশ^াসে পরদিন ১১/০৬/২০২১ তারিখে স্বামী মহব্বতের সাথে পিতার বাড়িতে আসি। বিকালে সে আমার মায়ের ঘরে থাকা আড়াই লক্ষ নগদ টাকা ও আমার স্মার্ট ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও পিতার বাড়িতে না আসায় বার বার ফোন দিলে ফোন রিসিভ করে কখনো ফোন দিসনে বলে ফোন কেটে দেয়। পরদিন ১২/০৬/২০২১ তারিখ ভোরে আমার মাতাসহ তার বাড়িতে গেলে মহব্বত পালিয়ে থাকে এবং তার পরিবারের লোক গালিগালাজ এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমার সকল সাটিফিকেট, ভোটার আইডি কার্ড এবং পাসপোর্ট নিয়ে নেয় মহব্বত। যা এখনো তার কাছে রয়েছে। একাধিকবার চাইলেও দেয়নি। উপায়ন্তর হয়ে আমি সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার খবরে বেপরোয়া হয়ে আমাকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে বলেন, মামলা করে কি করবি, টাকা দিয়ে সব ঠিক করে নেবো। আমার শিশু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার শত নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তার পিতার ইন্ধনে কোন কারণ ছাড়ায় আমাকে তালাক দেওয়ার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি গোপনে জানতে পেরেছি মহব্বত আবারো বিবাহ করেছে। যে কারণে আমাকে তার আর সহ্য হচ্ছে না। এখন নারী নির্যাতন মামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে আমার বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করেছে। আমি এখন শিশু সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তিনি তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা এবং তার লম্পট পিতাসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।