জি.এম আবুল হোসাইন : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া ভোবার বটতলা এলাকার স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা আরজান বিবি। স্বামী কুরবান আলী ড্রাইভার আবার বিয়ে করে আলাদা থাকেন। নিজের জায়গা জমি, ঘর বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। শিশুপুত্র ও আরজান বিবির সাথে কোন যোগাযোগ নেই তার। আরজান বিবি “ডেইলি সাতক্ষীরা”কে বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করি, আবার দিনমজুরি করেও সংসার চলে। থাকার মত নিজের ঘরটুকুও নেই। শিশুপুত্র তামিম (১১) কে নিয়ে থাকি প্রতিবেশীর ঘরের দোয়ালের পিছনে একটি চালের বেড়ার নিচে। তাও আবার বেশিদিন থাকা যাবে না। যাদের জায়গায় থাকি তারা সেখানে ঘর বানাবে।
তারপর কোথায় থাকব তাও জানি না। লকডাউনে কাজের অভাবে সংসার প্রায় অচল। মাঝে মাঝে সরকারি সহযোগিতা পাই নামে মাত্র। ঈদে একমাত্র শিশুপুত্র তামিমের মুখে হাসি ফুটাতে তাকিয়ে থাকতে হয় অন্যের দিকে। কোন ঈদে তামিমকে কেউ কেউ জামাকাপড় দেয়। আবার কোন কোন ঈদে ভাগ্যে জোটে না নতুন কাপড়। কথাগুলো বলতে বলতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন স্বামী পরিত্যক্তা আরজান বিবি। এপ্রসংগে জানতে চাইলে ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শরিফুজ্জামান ময়না বলেন, আরজান বিবির স্বামী কুরবান আলী তাদের কোন খোঁজখবর নেয় না। আমি মাঝে মাঝে সরকারি সহযোগিতা দেই। প্রয়োজনের তুলনায় তাও আবার নগন্য। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ বেতারের নাট্যকার ও কবি ডা. মো. সামছুজ্জামান বলেন, বর্তমানে আমরা তামিম ও আরজান বিবির মত আমাদের চারপাশের অনেকের খোঁজখবর রাখার সময় পাই না। আবার ইচ্ছে করেও রাখি না। আমাদের এই ধরনের মানসিকতার পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। তাহলে হয়তো তামিম-আরজানের মত অবহেলিত দু’একটি মানুষের মুখে ফুটতে পারে অমলিন হাসি।