খেলার খবর : কোয়ারেন্টিন ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়ে গেল ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার মধ্যকার লড়াই। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়দের হাতাহাতির ঘটনার পর ম্যাচ স্থগিত করার খবর জানাল লাতিন আমেরিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল।
এক টুইট বার্তায় কনমেবল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটায় জানায়, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মধ্যকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি রেফারি স্থগিত করেছে। ম্যাচ রেফারি ও ম্যাচ কমিশনার ফিফার শৃঙ্খলা কমিটির কাছে এ নিয়ে প্রতিবেদন দেবে। তার ওপর ভিত্তি করে এই ম্যাচের ভবিষ্যৎ ঠিক করা হবে। এই প্রক্রিয়া বর্তমান নিয়ম দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করেই এগোবে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব ফিফার প্রতিযোগিতা। এ ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্তের ক্ষমতা আছে কেবল ওই প্রতিষ্ঠানেরই।
কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হয় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। কিন্তু ম্যাচ শুরু হতে না হতেই তুলকালাম বেধে যায়। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটের মাথাতেই ঝামেলা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমে চলে যান। ফলে ম্যাচটি মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। এমনটাই জানিয়েছে,স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে। সাইড লাইনের পাশে অচেনা একজনকে দেখে আর্জেন্টিনার দুই খেলোয়াড় নিকোলাস ওতামেন্দি ও মার্কোস আকুনা জিজ্ঞেস করলেন কে? সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘিরে ধরলেন অনেকে। মুহূর্তের মধ্যে হাতাহাতি হয়ে যায়। পরে দ্রুত এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়া পত্রিকা টিওয়াইসির প্রতিবেদন অনুসারে পরে জানা যায়, সাইডলাইনে থাকা লোকটি ছিলেন ব্রাজিলের স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো আর জোভান্নি লো সেলসো ব্রাজিলের কোয়ারেন্টিন নিয়ম না মেনে ব্রাজিলে খেলতে এসেছেন। এর জন্য ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান এজেন্সির একাধিক কর্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্যরা মাঠের ভেতরে ঢুকে যান। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল মার্তিনেজ, রোমেরো ও লো সেলসোকে আটক করা। বিষয়টি নিয়ে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়ে যায়। পরে এই অভিযোগের জন্য মাঠ ছেড়ে উঠে যান আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা।
ঝামেলার পর ব্রাজিলিয়ান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় লিওনেল মেসি ও নেইমারকে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় দুজনকে। তবুও ম্যাচটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুরোপুরিভাবে ম্যাচটি বাদ হলে আর্জেন্টিনারই লাভ হবে। কারণ দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবলের শৃঙ্খলাবিধির ৭৪ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা আছে, ম্যাচ শুরু হয়ে গেলে খেলা থামিয়ে খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যাবে না। খেলতে বাধা দেওয়া যাবে না। খেলোয়াড় সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে সেটা আগেই মেটাতে হবে, ম্যাচ চলাকালীন সময়ে নয়। যদি এমন ঘটনা হয়, তাহলে যে দলের কারণে ম্যাচ থেমে যাবে, সে দল তিন পয়েন্ট হারাবে। প্রতিপক্ষ দল পাবে সেই তিন পয়েন্ট। সেই অনুযায়ী তিন পয়েন্ট পাওয়ার কথা আর্জেন্টিনার। তবে দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়!