দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের কাছে গোয়েন্দাদের পাঠানো গোপন তথ্য আর গোপন থাকছে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সেসব তথ্য পৌঁছানোর আগেই তা ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও বেসামরিক প্রশাসনের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরোধ; তৈরি হয়েছে আন্তদাপ্তরিক বিরোধও।
এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে সচিবদের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
চিঠির বিষয়টি স্বীকার করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এই চিঠিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সচিবদের মাধ্যমে দপ্তরগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।
সচিবদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে ডাইরেক্টর জেনারেল অব ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাসহ (এনএসআই) অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দাকার্যে নিয়োজিত থেকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে থাকে।
গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্য দেশ পরিচালনায় নীতি- নির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সকল অতি গোপনীয় তথ্য সিলগালাকৃত খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয় যাতে উক্তরূপ তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যতিরেকে অন্য কারো কাছে প্রকাশিত না হয়।’
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বেসামরিক প্রশাসনের সম্পর্কের অবনতির বিবরণ দিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলমের সই করা এই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি মহাপরিচালক, ডিজিএফআই কর্তৃক প্রেরিত আধা-সরকারি পত্র মারফত জানা যায় যে, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের গোপনীয়তা অনেক সময় রক্ষিত হচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের বরাতসূত্র উল্লেখ করা হয়, এমনকি উক্তরূপ প্রতিবেদনের ছায়ালিপিও কার্যার্থে সরবরাহ করা হয়- যা অনাকাঙ্ক্ষিত। এই ধরনের কাজের ফলে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে এবং মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের কাজে বিঘ্ন সৃষ্ট হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য দপ্তরগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনার মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থায় উল্লেখিত বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে যে কোনো গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় প্রতিবেদন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণে আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি’।