আসাদুজ্জামান ঃ সাতক্ষীরার মাধবকাটির চিহ্নিত ভূমিদস্যু ওয়ারেশ আলীর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দাবীতে ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানান,
সদর উপজেলার মাধবকাটি গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর পুত্র ভুক্তেভোগী শফিকুল ইসলাম।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি একাধারে ফোরকানিয়া কোরআনিয়া মাদ্রাসার
সভাপতি, মাধবকাটি প্রাইমারী স্কুলের সহ-সভাপতি, মাধবকাটি কাঁচা বাজার
জামে মসজিদের সদস্য, বলাডাঙ্গা হেফজখানার সদস্য। একই এলাকার মৃত মাদার
মোড়ল ওরফে পাগলা মোড়লের পুত্র ওয়ারেশ আলীর সাথে আমার বিরোধ চলে আসছিল।
আমাকে সর্বশান্ত এবং হয়রানির করার জন্য বিগত ২০১৯ সালের পহেলা অক্টোবর
ওয়ারেশ আলী তার কন্যাকে ধর্ষন চেষ্টার একটি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে নিজে বাদী হয়ে আদালতে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা খারিজ হওয়ার পর বিগত ২০১০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী ওয়ারেশ আলী আমার বিরুদ্ধে আদালতে আরো একটি
মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। মামলাবাজ ভূমিদস্যু ওয়ারেশ আলী তার আতœীয় স্বজনদের বাদী করে আদালতে একের পর এক আরো ৩টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
ইতিমধ্যে এসব মামলাগুলো সবই মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে। এছাড়াও
তিনি আমাকে আরো ৩টি পেন্ডিং মামলা জাড়িয়ে দেন। তার দেওয়া মিথ্যা মামলায়
আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী আরো একটি মিথ্যা মামলায়
আমাকে জড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, আমি ঢাকা থাকাকালিন সময়ে গদাঘাটা গ্রামের মোকসেদ মোল্লার
পুত্র ওয়ারেশের কন্যার আতœীয় ডাকাতী মামলার আসামী মিজানুর রহমানকে দিয়ে
সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। আমি বাড়ি ফিরে আসার পর ওয়ারেশ এবং
মামলা বাদী মিজানুর গত ২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ নিয়ে আমাকে চিনিয়ে
দেন। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর পুলিশ আমাকে আটক করে ছিনতাই মামলায় কারাগারে
প্রেরণ করেন। ভূমিদস্যু ওয়ারেশ আলীর হাত থেকে রক্ষা পেতে গত ৮ মার্চ আমি
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করি। এঘটনায় ওয়ারেশ আলী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ১২ মার্চ জঘন্য মিথ্যাচার করে আমার বিরুদ্ধে
একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। যা পরদিন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
সেখানে ওয়ারেশ আলী বলেছেন আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার একটিরও নাকি
বাদী তিনি নন। যা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এর তীব্র নিন্দা ও
প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রকৃত পক্ষে তিনি আমার বিরুদ্ধে যে ৯টি মামলা
করেছেন এর মধ্যে ৫টি মামলার বাদী ওয়ারেশ আলী নিজেই। আর বাকী ৪টি মামলার
বাদী তার আতœীয় স্বজন। যার সকল কাগজপত্র ও মামলার এজাহারের কপি আমার কাছে
সংরক্ষিত রয়েছে। যা সুষ্ঠু তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। ধর্মীয়
লেবাসে ওয়ারেশ আলী মানুষকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ৮১নং
মাধবকাটি মৌজার এস.এ ২৯৪ ও ২৩২ নং খতিয়ানে ১৬১ ও ১৬২ দাগের ১.৪ একর ‘ক’
তফসীলভুক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে ভোগদখল করায় ওয়ারেশ আলীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আতিয়ার রহমান যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা
(দেওয়ানী মামলা নং ১১/২১) দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়ারেশ আলী ওই
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডাকাতী মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৮ সালে শিক্ষক আতিয়ার
রহমান কোন উপায় না পেয়ে চাকুরি বাঁচাতে অন্যত্র চলে যান। পরে ওই
সম্পত্তির ভূয়া দলিল করে ওয়ারেশ আলী ভোগদখল করেন। সেখান থেকে লক্ষ লক্ষ
টাকা মাটি বিক্রি করে তিনি তা আত্মসাৎ করেছেন। এরপরও ওয়ারেশ আলী নিজেকে
এবং তার পুত্র আবুল বাশারকে ধোয়া তুলশীপাতা দাবি করেছেন। অথচ আমার
বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করায় এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে
গণস্বাক্ষর পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন। কোন ভালো
মানুষের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী এভাবে গণস্বাক্ষর করে কি না তা আমার জানা
নেই। ওয়ারেশ আলীর বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ ১১টি নাশকতার মামলা রয়েছে। আর তার
ছেলে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে ৬টি চেক জালিয়াতি ও ৭টি নাশকতার মামলা রয়েছে।
ওই ডাকাত ও জালিয়াত চক্রের ষড়যন্ত্রে আমি আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় মিথ্যা মামলার বাদী ওয়ারেশ গংয়ের ষড়যন্ত্রের হাত
থেকে রক্ষা পেতে এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##