দেশের খবর: মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয়চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
বুধবার ( ২১ এপ্রিল) রাতে তদন্ত কমিটির সদস্য মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন তিনি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের হাতে বুধবার বিকাল ৫টায় সশরীরে হস্তান্তর করেছেন। ১০ জনের লিখিত সাক্ষ্য, সাতজনের মৌখিক সাক্ষ্য ও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মতামতও তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার বলেন, রেকর্ডের সঙ্গে জড়িত চার শিক্ষার্থী লিখিতভাবে তাদের ভুল হয়েছে মর্মে স্বীকারোক্তি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছে; এ বিষয়টিও তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অডিও রেকর্ড করে প্রধান শিক্ষকের কাছে না গিয়ে প্রথমেই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য মাহবুবের চালের আড়তে যায়।
তিনি আরও বলেন, সবার জবানবন্দিতে বোঝা যায়, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে কারও ইন্ধন থাকতে পারে।
হৃদয় মণ্ডল প্রায় ২১ বছর ধরে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও গণিত পড়াচ্ছেন। গত ২০ মার্চ ক্লাস নেওয়ার সময় তার কথা অডিও রেকর্ড করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ২২ মার্চ একদল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে, তাদের সঙ্গে কিছু বহিরাগত যুক্ত হয়।
পরে পুলিশ গিয়ে হৃদয় মণ্ডলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ওই রাতেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ধর্মবিশ্বাসকে অপমানিত করার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ থানায় বিদ্যালয়টির অফিস সহকারী (ইলেকট্রিশিয়ান) মো. আসাদ মামলা করেন। হৃদয় মণ্ডলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ঘটনায় সারাদেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টি তদন্তে ১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে।
বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল ১৯ দিন কারাভোগের পর ১০ এপ্রিল জামিনে ছাড়া পান। মামলার হাজিরার তারিখ ছিল বুধবার। মুন্সীগঞ্জ ১ নম্বর আমলী আদালতে তিনি হাজিরা দেন। আদালতটির বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আগামী ২৫ মে দিন ঠিক করেছেন।