দেশের খবর: ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সম্মেলনে সংঘর্ষ চলাকালীন দায়িত্বরত পুলিশের ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন ছাত্ররা। বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই দাবি তুলে ধরেন ছাত্ররা।
সংবাদ সম্মেলনে দাবিসমূহ হচ্ছে-
১. হামলার উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. আহত সকল শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়ভার নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নিতে হবে।
৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।
৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মাকের্টে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।
এই দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় তাদের আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান বক্তারা।
সম্মেলনে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের পক্ষে কথা বলা শুরু করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুজয় বালা। ঢাকা কলেজ ইতিহাসের যে কোনো আন্দোলনে সামনের সারিতেই ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোমবার আনুমানিক রাত ১২টায় দুই দোকানের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এতে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। কিন্তু ছাত্রদের এই প্রতিবাদে এডিসি হারুন ও নিউমার্কেট থানার ওসি বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তাদের পক্ষপতামূলক বক্তব্যও ভাইরাল হয়েছে। পুলিশ রাবাব বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ। হকাররা ঢাকা কলেজে মুহুর্মুহু হামলা চালায়।
পরে, অধ্যক্ষের আশ্বাসে রাত ৩টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। পরদিন সকালে ফের হামলা চালায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এবারও ছাত্রদের ওপর হামলা করে। হকাররা কলেজের ফটকে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। ক্ষতি হয় ক্যাম্পাসের অনেক স্থাপনার।