নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালায় নারী দিয়ে ব্লাক মেইল করে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তৈলকুপী গ্রামের রিপন সরদার বিরুন্ধে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভূগীর পরিবার। অভিযুক্ত রিপন সরদার পাটকেলঘাটার তৈলকুপি গ্রামের আমিন সরদারের ছেলে।
সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী ০৩ নং আদালতে মামলা দাখিল করেন যুগিপুকুরিয়া গ্রামের শরিতুল্লাহ সরদারের পুত্র ফান্টু সরদার। যাহার ধারা নং ৪০৬,৪২০ ও ৫০৬।
উল্লেখিত মামলার বিবরন সম্পর্কে জানা যায়, আসামী রিপন অত্যান্ত ধূর্ত, প্রতারক, পরসম্পদ লোভী, পরসম্পদ আর্তসাৎকারী, ন্যাস্ত সরল বিশ্বাস ভঙ্গকারী এবং বিভিন্ন মানুষের ভুয়া বিয়ে দিয়ে ব্লাকমেইল করে প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন করিয়া টাকা পয়সা আদায় করে থাকে।
এছাড়াও বহু অপকর্মের হোতা রিপন সরদারের বিরুদ্ধে এলাকার অসহায় নিরিহ মানুষকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, সংসারে অশান্তি লাগিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, আওয়ামীলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে জাতির জনকের ছবি ঝুলিয়ে খাস সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে দোকান নির্মান করে বিক্রয় করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, চাঁদাবাজি, সরকারি গাছকাটা, ডাকাতি সহ বহু অপকর্মের সাথে রিপন জাড়িত।
গত ইং-১২-০৫-২০২২ তারিখে খজ ৪৮২১৫৮৩ ও কড ৭৩০৯০৪ নং ১৫০ টাকার একটি এফিডেভিট করিয়া আমাকে ব্লাকমেইল করার জন্য তানিয়া সুলতানা নামের একজন মহিলাকে দেখাই এবং উক্ত তানিয়াকে তালাক প্রদান করেছি বলে আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দামার ভয় ভীতি দেখাইয়া আমার কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আর্তসাৎ করে।
মামলার বাদি ফান্টু সরদার জানান, আমি একজন ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ী। আমার দুইপুত্র এবং একটি প্রতিবন্ধী কন্যা সন্তান রয়েছে। পাটকেলঘাটা পাচরাস্তার মোড়ে ব্যবসা পরিচালনার সুবাদে রিপন সরদারের সাথে আমার পরিচয় হয়। রিপনের সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় তার উপর অগাথ আস্থা ছিলো। রিপন গোপনে ফাঁদ পাতে। আর সে কারনে তার পূর্ব পরিচিতি তৈলকুপি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী তানিয়া সুলতানার সাথে যোগসাজস করে। একপর্যায়ে ওই তানিয়া সুলতানার ছবি এবং আমার ছবি ব্যবহার করে একটি ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে ভূয়া এফিডেভিট তৈরি করে তার সাথে আমি বিবাহ করেছি মর্মে একটি ভুয়া কাগজ প্রদর্শন করে ব্লাক মেইলের মাধ্যমে আমার কাছে অর্থ আদায় করতে থাকে এক পর্যায়ে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা আমার নিকট থেকে বিভিন্ন সময় নিয়ে থাকে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওই ভূয়া এফিডেভিটের কাগজ আমার স্ত্রী সন্তানদের কাছে পৌছে দিতে এবং এলাকায় প্রচার করে হয়রানি করবে মর্মে হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে। আমি লোক লজ্জার ভয়ে লিচুর মৌসুমের ব্যবসার টাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে রিপন সরদার কে ৩লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করি। সে আবারো টাকা দাবি করতে থাকে। আমার কাছে আর কোন টাকা না থাকায় তাদের টাকা দিতে না পারায় আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক রিয়েলমি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপী গ্রামের রিপন সরদার।
এরপর আবারো টাকা চাইলে না দিতে পারায় ওই ভূয়া এফিডেভিটের কাগজপত্র আমার স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের লোকজনদের কাছে দিয়ে দেয়। এতে পরিবারের অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ওই তানিয়ার সাথে আমার কোন সম্পর্ক ইতোপূর্বেও ছিলো না। বর্তমানে নেই। শুধু মাত্র অর্থের লোভে ফাঁদ পেতে রিপন সরদার একটি মিথ্যা কাল্পনিক নাটক সাজিয়েছে। এখনো রিপন প্রতিনিয়ত আমাকে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে চাঁদাদাবি করে যাচ্ছে। এঘটনায় আমি আদালতে মামলা দাখিল করেছি।
বহু অপকর্মের হোতা রিপন সরদার কে দ্রুত গ্রেফতার পুর্বক আমার টাকা আদায় সহ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
মামলার আসামী রিপন সরদার কে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে তানিয়া সুলতানা বলেন, একই গ্রামে বাড়ি হওয়ায় রিপন সরদারের সাথে পূর্ব পরিচয় থাকায় আমাকে চাকুরী দেবে বলে আমার আইডি কার্ড ও ছবি নিয়েছিলো। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে ব্লাক মেইলে বাধ্য করে ফান্টু সরদারের সাথে জোরপূর্বক কথা বলায়। একপর্যায়ে সে ভুয়া বিয়ের নাটক সাজিয়ে ফান্টু সরদারের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বহু অপকর্মের হোতা রিপন সরদার কে প্রশাসনের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মূলত শাস্তি দাবি জানাচ্ছি। যাহাতে এই ধরনের কাজ ভবিষ্যতে ধূর্ত রিপন আর কাউকে বিপদে ফেলতে না পারে।