দেশের খবর: দেশের জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে গত জুন মাসে ৩ হাজার ১১০ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৭ জন নিহত ও ২ হাজার ৬২২ জন্য আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সেভ দ্য রোড’। ২১টি গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে এ জরিপ করেছে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। প্রতিবেদনটি পাঠ করেন সেভ দ্য রোডের মহাসচিব শান্তা ফারজানা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর জুন মাসে ৮৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৭৫২ জন আহত এবং ২৭৬ জন নিহত হয়েছেন। ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬১৮টি। এর মধ্যে আহত ৪৫৬ ও নিহত ১৫৬ জন। ৯৩৮টি বাস দুর্ঘটনায় আহত ৭৫১ ও নিহত ৪২০ জন। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লায়, মহাসড়কে অসাবধানতার কারণে লরি, পিকআপভ্যান, নসিমন, করিমন, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত ও রিকশা-সাইকেলে ৬৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯৫ ও আহত হয়েছেন ৬৬৩ জন।
এছাড়া জুন মাসে নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১২২টি। এতে আহত ৪৭৭ জন ও নিহত ২৪ জন। রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৯৭টি। এতে আহত ১৭২ জন ও নিহত ১৭ জন। তবে আকাশপথে দুর্ঘটনা না হলেও বিমানবন্দরে অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন সময় ৭৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানানো হয়।
মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে চালানো, ট্রাফিক নিয়ম না মানা, হেলমেট ব্যবহারে অনিহা দুর্ঘটনার কারণ। অপর দিকে, অসাবধানতাু ও ঘুমন্ত চোখে ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাসে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে এর পেছনে কারণ রাস্তার খানাখন্দ, অচল রাস্তাঘাট ও সড়ক পথে নৈরাজ্য।
যাত্রাপথ দুর্ঘটনামুক্ত করতে সেভ দ্য রোডের পক্ষ থেক সাতদফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো— বঙ্গবন্ধু ফুটবল লীগের খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়কপথ দুর্ঘটনায় নিহত অর্ধশত শিশু-কিশোরের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে। সড়কপথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টমশ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতিত চালক-সহযোগী নিয়োগ বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্থল, নৌ, বিমান ও রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহতদের সরকারিভাবে কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে। পথ দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিতকরণের মধ্যদিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের আগ পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌপুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সবপথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। স্পিড গান, সিসিটিভি ক্যামেরা, ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।