নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা শহরের নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসন সংকট ও সমাধানে করণীয় বিষয়ক এক সংলাপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা। সংলাপে উঠে আসে পৌরসভার বস্তি এলাকাগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আবাসন মানুষের মৌলিক অধিকার হওয়া সত্ত্বেও এই জনগোষ্ঠীর জন্য এখনো কার্যকর কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এসব কথা বলেন।
সংলাপে ধারণাপত্র পাঠ করেন বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান।
এতে বলা হয়, সাতক্ষীরা পৌরসভায় ৪৭টি বস্তি রয়েছে। যেখানে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ বসবাস করে। যা পৌর এলাকার মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ। এই জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে গ্রাম থেকে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এতে তাদেরকেও যেমন নানা সংকটের মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছে, তেমনি কোনো পরিকল্পনা না থাকায় সংকট আরও বাড়ছে।
সংলাপে বক্তারা বলেন, বস্তিগুলোতে পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা অপ্রতুল, নেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোন সঠিক পরিকল্পনা। বস্তিতে প্রতিটি টয়লেট একাধিক পরিবার ব্যবহার করে, যা কোনভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। পরিবেশ অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন ও ঘিঞ্জি।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা নগরের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও দুর্যোগসহনশীল বাসস্থান নিশ্চিতকরণ, বস্তির শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষ ঝুঁকি ভাতা ও প্রণোদনা প্রদান এবং সবার জন্য বাসযোগ্য নগর পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তাব করেন।
সংলাপে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এসএম বিপ্লব হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ কর্মী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাস, স্বদেশ পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, নাগরিক নেতা আলী নূর খান বাবুল, উদীচীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, ভূমিহীন নেতা আব্দুস সামাদ, সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, গোলাম সরোয়ার, বস্তিবাসীদের মধ্যে রাজারবাগান ঋষিপাড়ার কুমারেশ সরদার, ইসলামপুরের ইসরাফিল হোসেন, আতির বাগানের আশরাফ আলী, কাজীপাড়ার এরশাদ আলী, ইটাগাছার খাদিজা খাতুন ও মুহিনুর ইসলাম, শিক্ষা, সংস্কৃতি বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য হৃদয় মন্ডল প্রমুখ। #