নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ মোশারাফ হোসেন দীর্ঘ ১৩ বছর পরে ফিরেছেন সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে ভষ্মিভুত হওয়া সেই নিজ বাড়িতে। নতুনরূপে ঘরবাড়ি সংস্কার করে আবারও স্বপ্ন দেখছেন সহধর্মিণীকে নিয়ে পূর্বের ন্যায় সুখে শান্তিতে বসবাস করার।
তবে আজও শাস্তির আওতায় আসেনি সেইসব দুর্বৃত্ত আর অগ্নিসন্ত্রাসীরা। যারা দোকান ভর্তি কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল আর সাজানো গোছানো বাড়ি থেকে লাখ লাখ টাকার সম্পদ লুট করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সর্বশান্ত করেছিল তারা আজও বীরদর্পে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধূসুদনপুর গ্রামের শেখ আরশাদ আলী মেঝ পুত্র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জামায়াত নেতা শেখ মোশারাফ হোসেনের সাজানো গোছানো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো চৌমুহনী বাজারে। দোকানে মালামাল ছিলো ১৫ লক্ষাধিক টাকার। ২০১৩ সালের ১৭ ই ডিসেম্বর বিকেলে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের মৃত আকরাম হোসেনের ছেলে আবু তালেব সরদার, হামজা সরদার, আসমত ডাক্তারের ছেলে শেখ আশেক ইকবাল পাপ্পি, শ্রীধরকাটি গ্রামের নেফু শেখের ছেলে শেখ সিদ্দিক, শেখ সাদেক ও শেখ রফিকুল, শ্রীরামপুর গ্রামের আরশাদ আলী গাজীর ছেলে মিজানুর ও শাহিনুর, পারুলগাছা গ্রামের রাশেদ ঢালীর ছেলে শাহ আলম ও শাহাজান ঢালী, গনি মোড়লের ছেলে আফছার মোড়ল, নীলকন্ঠপুর গ্রামের বদরুদ্দীন সরদারের ছেলে খলিল সরদার, জলিল সরদার, নুরু সরদারের ছেলে সুমন সরদার, জয়পত্রকাটি গ্রামের মৃত শহর আলী সরদারের ছেলে নুরুল হক সরদার, চাঁচাই গ্রামের মোসলেম এর পালিত পুত্র জাকির হোসেন, মুকুন্দপুর গ্রামের লক্ষীপদ ঘোষের ছেলে সুভাষ ঘোষ, শ্রীবাস ঘোষ, বন্দকাটি গ্রামের আনছার উদ্দীনের ছেলে মোনায়েম হোসেন, হোগলা গ্রামের ফিরফিরে ইউনুস, বাসার মোড়ল, খোকন মোল্লা, রউফ মোল্লা, মুকুন্দপুরের এরশাদ সানাসহ ৫০/৬০ জনের একটি দল তান্ডব চালিয়ে মোশাররফের বাড়ী ভস্মীভূত করে দেয়। সেসময় মোশাররফ হোসেন সস্ত্রীক কোন রকমে পালিয়ে জীবন করেছিল।
কিন্তু তখনও পর্যন্ত ঐসকল দুর্বৃত্ত আর এলাকার নামকরা মামলাবাজ, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা মিলে এতো ক্ষয়ক্ষতি করার পরেও মোশারাফ হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যাসহ নাশকতার ডজন খানেক মামলা দেয় আবু তালেব ও সিদ্দিক গং।
গত জুলাই আন্দোলনে স্বৈরাচার হাসিনার পলায়নে দীর্ঘ তেরো বছর পর বাড়িতে ফিরে তিনি দেখছেন সেই সকল আগুন সন্ত্রাসী আর দুর্বৃত্তরা চোখের সামনে দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বাভাবিক ভাবে। তাদের ভেতরে নেই কোনো অনুশোচনা কিংবা কৃত অপকর্মের ভয়।
এ বিষয়ে জামায়াত নেতা শেখ মোশারাফ হোসেন জানান, স্বৈরাচার হাসিনা পালালেও আমারসহ চৌমুহনী বাজারে সতেরোটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছিলো, এলাকার ১১টি বাড়িতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে উল্লাস করেছিলো আজও তারা সামনের মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে? কাদের আশ্রয়ে আর কোন সাহসে? নির্দোষ ও সরলমনা মানুষদের ধরে ধরে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিয়েছিল, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী ও চাঁদাবাজী করে ২০১৩ পরবর্তীতে যারা আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হয়েছে তারা আজও বেপরোয়া। তাদের ভয়ে এখনো রাত কাটাতে হচ্ছে সেই সময়ের ক্ষতিগ্রস্ত ও হামলা, মামলায় জর্জরিত বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের। আমি এহেন হীন কর্মকান্ডে জড়িত সকলের শাস্তি চাই।