ন্যাশনাল ডেস্ক : সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে সারাবিশ্ব থেকে টাকা জমা রাখার পরিমাণ কমলেও বাংলাদেশ থেকে টাকা রাখার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৬ সালে এসব ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে টাকা জমা রাখা হয়েছে ৬৬ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার পাঁচশ ৬৬ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের তুলনায় এর পরিমাণ ১৯ শতাংশ বেশি। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) প্রকাশিত ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এসএনবির ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে আগের বছরের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে টাকা জমা রাখার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। ২০১৫ সালে এসব ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে টাকা জমা করা হয়েছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় চার হাজার সাতশ ১৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে টাকা জমার পরিমাণ বেড়েছে ১১শ ৪৯ কোটি টাকা। এছাড়া, ২০০৯ সালের পর থেকে ২০১০ সাল ও ২০১৪ সাল ছাড়া বাকি প্রতিটি বছরেই এসব ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে টাকা জমা রাখার পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ২০১৬ সালে এসে এসব ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে রাখা টাকার পরিমাণ ২০০৯ সালের তুলনায় চার গুণেরও বেশি।
সার্বিকভাবে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছে যুক্তরাজ্য থেকে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এ ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান, দ্বিতীয় স্থানে ভারত, তৃতীয় স্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ। তবে গত এক বছরে ভারত থেকে টাকা জমার পরিমাণ কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। আর সার্বিকভাবে সারাবিশ্ব থেকে ২০১৬ সালে টাকা জমা হয়েছে আগের বছরের তুলনায় ৩.৪ শতাংশ কম।
ধারণা করা হয়, সাধারণত জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে টাকা জমা রাখার পরিমাণ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোকেই অগ্রাধিকারভিত্তিতে বেছে নেন আমানতকারীরা। কারণ গ্রাহকদের তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এসব ব্যাংক অর্থ গোপন করার জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের জানান, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনটি কিসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক অবগত নয়। তবে মানি লন্ডারিং রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের টাকা জমা রাখার প্রসঙ্গে বলেন, ‘এসব ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের ধরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই।’ তবে অনেকেই এসব ব্যাংকে তাদের মূল্যবান সম্পদ জমা রাখেন এবং টাকা সাধারণত বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
পূর্ববর্তী পোস্ট