নিজস্ব প্রতিনিধি :
চাঁদার টাকা না পেয়ে সাতক্ষীরা আদালতে কাল্পনিক মামলার দাখিলের অভিযোগ উঠেছে হুন্ডি ব্যবসায়ী অমিত কুমার বিশ^াসের বিরুদ্ধে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তালার খানপুর গ্রামের অসিত কুমার সরকারের ছেলে জয় কুমার সরকার।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি নাভানা ওষধ কোম্পানীতে এসআর পদে সাতক্ষীরা জেলায় দায়িত্বপালন করছি। আমার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আমলী আদালত-১ এ জাল জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন শহরের দক্ষিন পলাশপোল এলাকার মৃত. সাধন বিশ^াসের ছেলে অমিত কুমার বিশ^াস।
আদালতে দাখিল করা মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, আমার বোন জামাই প্রশান্ত কুমার দাস তার নিকট থেকে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর তারিখে স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামার মাধ্যমে হাওলাত হিসেবে ছয় লাখ টাকা নেন। বোন জামাই ছয় মাসের মধ্যে টাকা না দিলে সেই টাকা আমি পরিশোধ করবো। চলতি বছরের ২৩ জুন আদালতে দাখিল করা মামলায় বোন জামাই প্রশান্ত কুমারকে এক নম্বর ও আমাকে দুই নম্বর আসামী করা হয়েছে।
বাস্তবতা হলো, যে তারিখে টাকা হাওলাত নেওয়া বা অঙ্গীকারনামা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর দেখানো হচ্ছে সেই তারিখে আমি খুলনায় নাভানা কোম্পানীর অফিসে ছিলাম। তৎকালীন সময়ে আমি ওই এলাকায় এসআর পদে চাকুরি করতাম। সুতরাং অঙ্গীকারনামায় যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি আমার নয়, জাল জালিয়াতি। মামলায় আদালত থেকে দেওয়া সমন জারি বাড়িতে পৌঁছানোর পর মামলার বিষয়টি আমিসহ অন্যরা জানতে পারি। আমি বোন জামাইয়ের নিকট ঘটনার বিবরণে জানতে পারি, মামলার বাদী অমিত কুমার বিশ^াস বোন জামাই প্রশান্ত কুমার দাসের পূর্ব পরিচিত। সেই সুবাদে অমিতের নিকট থেকে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ২০২২ সালের দিকে সুদে হিসেবে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। পরবর্তীতে ২ বছরে সুদ আসল মিলে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধও করে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গেল ১৩ জুন বোন জামাই অভাবের তাড়নায় কাজের উদ্দেশ্যে ভারতে পাড়ি জমায়। এরপর ১৫ জুন অমিত কুমার বিশ^াস, পুরাতন সাতক্ষীরার সৈয়দ আলীর ছেলে কোরবান আলী, একই এলাকার বাবর আলীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম, আশাশুনির পাইথালী গ্রামের মৃত. হরিপদ মন্ডলের ছেলে প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল, দেবহাটা উপজেলার কদমখালী গ্রামের গহর আলী গাজীর ছেলে সোহেল উদ্দীন গাজীসহ ৭-৮ জন তালার খানপুরে আমাদের বাড়ীতে যায়। গুন্ডা ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির এসব লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে অমিত কুমার বিশ^াস আমার বাবা অসিত কুমার সরকারকে নানা ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বলতে থাকে, ১০ লাখ টাকা দিতে হবে না হলে তোমার জামাই প্রশান্তকে ভারতে মেরে মাটিতে পুতে রেখে দেওয়া হবে। এসপি, ডিসি, পুলিশ প্রশাসন আমার হাতের মুখোয় থাকে। এই ঘটনার পর আমরা নি¤œ সম্প্রদায়ের মানুষ ভীত সন্তস্ত্র হয়ে পড়ি। ঘটনাটি গ্রামের আশপাশের অনেকেই জানেন দেখেন।
এই ঘটনার পর গত ২৩ জুন প্রতারক অমিত কুমার একটি স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামায় বোন জামাই ও আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ইচ্ছেমত লিখে নিয়ে আদালতে কাল্পনিক ও মিথ্যা মামলা দাখিল করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে, জয় কুমার সরকার বলেন, খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি অমিত কুমার একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী, সুদে কারবারী, প্রতারক হিসেবে শহরে ও নিজ এলাকায় পরিচিত। বিভিন্ন মানুষকে ভূয়া, জাল জালিয়াতি কাগজ তৈরী করে মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে দীর্ঘদিন। আমি এই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি ও প্রতারক অমিত কুমারকে শাস্তির আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। ##
০৬.০৯.২০২৫