মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : ‘মাছ চাষে গড়বো দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৭ উদ্যাপন উপলক্ষে পৌর দিঘীতে মৎস্য অবমুক্তকরণ, র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসের আয়োজনে শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক হতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সদর উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। ১৮-২৪ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা ০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে। বর্তমানে যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভাবে মৎস্য চাষ করা হচ্ছে। যেটা ঝুকিপূর্ণ ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। সকলের স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে মৎস্য চাষ করতে হবে। ‘জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও দারিদ্র্য বিমোচনের সাতক্ষীরা জেলায় গুরুত্ব অনেক বেশি। এ জেলায় বার্ষিক মৎস্য উৎপাদন হয় ১লক্ষ ৩১ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন। জনগণের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৮৯২২৩ মেট্রিক টন মাছ ও চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি এবং অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ। চিংড়ি চাষে সাতক্ষীরা দেশের প্রথম স্থানে থাকলেও তা এখন নানাভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। এক্ষেত্রে চিংড়ি পোনার ভাইরাস রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এজেলায় ৩০৯০ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হয়। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কাঁকড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে বন বিভাগের যে নীতিমালা রয়েছে ১০০ গ্রামের নিচে কোন কাঁকড়া ধরা যাবেনা তা সংশোধন করতে হবে। না হলে বৈদেশিকভাবে কাঁকড়া রপ্তানী হুমকির মুখে পড়বে। কারণ বিদেশে সাধারণত চাহিদা ৬০ গ্রামের কাঁকড়া। মৎস্য উৎপাদনে এ জেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এটি আমাদের ধরে রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, মৎস্য বিষয়ক কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম সরদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও মৎস্য পোনা ব্যবসায়ী আলহাজ¦ ডা. মো. আবুল কালাম বাবলা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা।
পূর্ববর্তী পোস্ট