ন্যাশনাল ডেস্ক : ‘পাঁচজনকে ক্রসফায়ার দিয়েছি, আরও ১৪ জনের লিস্ট করেছি’ একটি পত্রিকায় এমন বক্তব্য প্রকাশের পর ঢাকা-১৯ আসনের (সাভার) সাংসদ এনামুর রহমান দলের ভেতরে ও বাইরে চাপের মধ্যে পড়েছেন। আতঙ্কে রয়েছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীসহ অনেকেই। অনেকে গণমাধ্যমকর্মীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ফোন করে তালিকার খোঁজখবর জানতে চাচ্ছেন। সাংসদের বরাত দিয়ে বুধবার পত্রিকাটি ওই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিনহাজ উদ্দিন মোল্লার স্ত্রী নার্গিস আক্তার বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদকের কাছে ফোন করে সাংসদের ক্রসফায়ারের তালিকায় তাঁর স্বামীর নাম রয়েছে কি না, তা জানতে চান। নার্গিস আক্তার বলেন, সম্প্রতি তাঁর স্বামীকে একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। এরপর থেকেই তাঁর স্বামীকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ ঘটনার দিন তাঁর স্বামী ভারতে অবস্থান করছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা ক্রসফায়ারের তালিকায় তাঁর নাম আছে কি না, তা জেনে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই, খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি, সাভার থাকব কি থাকব না সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।’ সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার বলেন, পত্রিকায় সাংসদের বক্তব্য প্রকাশের পর থেকে অনেকেই তাঁর কাছে ফোন করে ক্রসফায়ারের তালিকায় তাঁদের নাম আছে কি না, তা জানতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এ ধরনের বক্তব্যে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী, বিশেষ করে যাঁরা দায়িত্বশীল পদে আছেন, তাঁদের সাবধানতার সঙ্গে কথা বলতে হবে। যা বললে দল এবং সরকারসহ নিজের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হবে, তা না বলাই ভালো।’ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংসদ এনামুর রহমান বলেন, ‘আমার বক্তব্যের জন্য আমি লজ্জিত ও জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। পাশাপাশি নিজের দোষ শিকার করে ফেসবুক আইডি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমার বক্তব্য প্রত্যাহার করেছি।’ এ ধরনের বক্তব্যের জন্য সরকারের ভেতর থেকে কোনো চাপ আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বকাঝকার পাশাপাশি তিরস্কার করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সাবধান করে দেওয়া হয়েছে।’
সাংসদ এনামুর রহমান নির্বাচনী এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সাভারে অনেক ক্যাডার আর মাস্তান ছিল। এখন সব পানি হয়ে গেছে। কারও টুঁ শব্দ করার সাহস নেই। পাঁচজনকে ক্রসফায়ারে দিয়েছি আরও ১৪ জনের লিস্ট করেছি। সব ঠান্ডা। লিস্ট করার পর যে দু-একজন ছিল, তারা আমার পা ধরে বলেছে, আমাকে জানে মাইরেন না আমরা ভালো হয়ে যাব।’
পূর্ববর্তী পোস্ট