ডেস্ক রির্পোট : ‘মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা আমাদের আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছায়নি, এর জন্য আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তার ওপর মুক্তামনির শরীরে নতুন উপসর্গ দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনের জ্বর ও রক্তপাতে তার শরীর অনেক দুর্বল। এ অবস্থায় আমরা তাকে শিগগিরই অপারেশন করাতে পারছি না।’ মুক্তামনির শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে এসব কথা বলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড বসেছিল জানিয়ে ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, ‘মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হওয়া আগের মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে ঢামেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম কে খানও যুক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পুরো মেডিক্যাল বোর্ড বসেছিল। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মুক্তামনি শারীরিকভাবে পুরোপুরি ফিট না হওয়া পর্যন্ত তার বায়োপসি হবে না।’
ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, ‘বুধবার (১৯ জুলাই) রক্ত দেওয়ার পর মুক্তামনির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তাকে ফিট করার জন্য আরও চেষ্টা করতে হবে। এজন্য আমরা তাকে পুষ্টিকর খাবার দিচ্ছি। বায়োপসি না করা পর্যন্ত কোনও ডায়াগনসিসে যেতে পারবো না আমরা। বায়োপসি করার মতো শারীরিক অবস্থায় সে পৌঁছায়নি। এর জন্য আরও চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে হয়তোবা তার বায়োপসি করতে পারবো। ততোদিন পর্যন্ত তার অপারেশন করা যাবে না।’
প্রাথমিকভাবে মুক্তামনি বিরল ‘লিমফেটিক ম্যালফরমেশন’ রোগে আক্রান্ত বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার চিকিৎসায় আট সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে, মেয়ে মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা নিয়ে নিজের ভয়ের কথা জানিয়েছেন তার বাবা ইব্রাহীম হোসেন। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাতে মেয়ের জ্বর ছিল ১০২ ডিগ্রি, বুধবারও সারাদিনও জ্বর ছিল। সকাল থেকে ডান হাত থেকে অল্প অল্প করে রক্ত পরলেও দুপুরের পর থেকে সেটা বেড়েছে। একের পর এক ডাক্তাররা আসছেন, কিন্তু আমি তো মেয়েটাকে নিয়ে ভয় পাচ্ছি।’
১১ বছরের মুক্তামনির ডান হাত ফুলে গিয়ে দেহের চেয়েও ভারী হয়ে গেছে। ফুলে যাওয়া সেই অংশে সাদা রঙের শত শত পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে। চার বছর ধরে এ রোগ বয়ে বেড়াচ্ছে ছোট্ট শিশুটি।