১২ আগস্ট। রাতের গাড়িতে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় ফিরবো। প্রথমে টিকিট কাটলাম এ কে ট্রাভেলসে। আব্দুল্লাহপুর থেকে রাত ১০টায় গাড়ি। সন্ধ্যার দিকে কাউন্টার ফোন করে বললো আব্দুল্লাহপুর থেকে গাড়ি যাবে না। যে কোন সময় এসে টিকিট দিয়ে টাকা নিয়ে যাবেন। পড়লাম বিপদে। রাতে ফিরতেই হবে- এই চিন্তা থেকেই ওদের বললাম আপনাদের শ্যামলী কাউন্টার থেকে এ কে ট্রাভেলসের দুটি টিকিট কনফর্ম করে দিন। তাই দিলো। উত্তরা থেকে শ্যামলী পৌঁছে সঙ্গীসহ রাত ১১টায় গাড়িতে (এ কে ট্রাভেলস, ১৯নং চেয়ার কোচ) উঠলাম। বাসে উঠেই বিপদ শুরু!
বসলেই সিট শুয়ে পড়ছে। সিটের চাবি (গিয়ার কি) নষ্ট। সিটটি ছিল ই-১, ই-২। আমি ই-২’তে। আমারটির গিয়ার কি নষ্ট। আর ই-১ এর গিয়ার কি ঝালাই করে ফিক্সড করা। কোন নড়ন-চড়ন নেই। আশপাশে তাকিয়ে দেখলাম ১৯ নং কোচের অধিকাংশ যাত্রীই একই কারণে বিরক্ত। সুপারভাইজারকে ডেকে গাল মন্দ করছে।
আমার সামনের সিটেরও একই অবস্থা। সামনের যাত্রী বসলেই সিট এসে পড়ছে আমার মুখে। আমি বসলেই সিট শুড়ে পড়ে পড়ছে পিছনের যাত্রীর মুখে। আবার আমার পাশের সিট চেষ্টা করেও উঠানো-নামানো করা যাচ্ছে না।
আমি ওইদিন ছিলাম এ কে ট্রাভেলসের যাত্রী। কিন্তু লিখতে বসেছি শুধু এ কে ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে নয়। সাতক্ষীরার যতগুলো পরিবহন কোম্পানি রয়েছে- প্রত্যেকটিরই রয়েছে এমন অসংখ্য কোচ। যেগুলো রাস্তায় নেমেছে পরিবহন কোম্পানিগুলো উদ্বোধনের সময় ৫, ১০, ১৫, ২০ বছর আগে। তারপর থেকে ওই সব কোচের আর কোন সংস্কার করা হয়নি। তবে, চলাচলের অযোগ্য এসব কোচ রাস্তায় খাটিয়ে মালিক পক্ষ ঠিকই মুনাফা করছে।
ঠিক একইভাবে সরকারের যেসব কর্তৃপক্ষের এসব দেখার কথা, যে কর্তৃপক্ষ গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় মাল পেয়ে তারাও থাকে নিশ্চুপ। ফলশ্রুতিতে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। কিন্তু পরিমানমত ভাড়া দিয়ে ভ্রমণ করবো, অথচ কাক্সিক্ষত সেবা পাব না- তা কি সহনীয়। অনেক সময় এসব নিয়ে যাত্রীদের সাথে গাড়ির হেলপার-সুপারভাইজারদের হাতাহাতিও হয়। কিন্তু মালিক পক্ষও দেখে না, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষও দেখে না। সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? আর বেশি কিছু লিখব না। শুধু এতটুকুই বলতে চাই- এ কে ট্রাভেলসসহ অন্যান্য কোম্পানিতে বিদ্যমান ১৯নং মার্কা কোচগুলো ট্রিপ সিডিউল থেকে অনতি বিলম্বে প্রত্যাহার কর। লেখক: সংবাদ কর্মী, (১৮.৮.১৭/সাতক্ষীরা)।
১৯নং কোচ প্রত্যাহার কর – অতিথি পাখি
পূর্ববর্তী পোস্ট