ফিচার ডেস্ক : দেখতে দেখতে সাদা পোশাকে ১০১টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেল বাংলাদেশের। সাফল্যের ঝুড়িতে ১০ জয়। ১০টি হীরকখণ্ড! ১০টি উৎসবের উপলক্ষ। ১০টি স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা। টেস্ট যাত্রায় লাল-সবুজরা প্রথম জয়টি দেখেছিল ৩৫তম টেস্টে এসে। ১০ জানুয়ারি, ২০০৫ সালে; চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। শততম টেস্টে আসে আরেকটি মাইলফলক ছোঁয়া জয়, কলম্বোর পি সারায়। সবশেষটি এল ঘরের মাটিতে, শের-ই-বাংলায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ১০ জয়ের সেই গল্পগুলো-
এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম
(৬-১০ জানুয়ারি, ২০০৫; প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)
সবার দৃষ্টি এক জায়গায় আটকে। আর একটা মাত্র উইকেট। এনামুল হক জুনিয়রের বলে সিলি মিড অফে উঠল ক্রিস পোফুর ক্যাচ। মোহাম্মদ আশরাফুল ভুল করলেন না। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম জয় বাংলাদেশের। অভিষেকের প্রায় পাঁচ বছর পর প্রথম জয়ের স্বাদ। তখনকার দলীয় সর্বোচ্চ প্রথম ইনিংসের ৪৮৮ রানে যাত্রা শুরু। পরে জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ৩১২ রানে অলআউট করে দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকরা গুটিয়ে গিয়েছিল ২০৪ রানে। পঞ্চম দিনে গড়ানো সেই ম্যাচে স্পিনার এনামুলের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রানে অলআউট সফরকারীরা। মাসাকাদজা-টেলর জুটি ১৫ ওভারে ৬৬ রান তুলে চাপে ফেলেছিলেন। কিন্তু টেলরের আউটে ভেঙে পড়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং। ২২৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২.২ ওভারে ৪৫ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়ে নায়ক এনামুল জুনিয়র।
বাংলাদেশ: ৪৮৮ (হাবিবুল ৯৪, রফিক ৬৯; পোফু ৪/১০৯) এবং ২০৪ (হাবিবুল ৫৫, রাজিন ২৬, চিগুম্বুরা ৫/৫৪)।
জিম্বাবুয়ে: ৩১২ (টাইবু ৯২, চিগুম্বুরা ৭১; রফিক ৫/৬৫, মাশরাফি ৩/৫৯) এবং ১৫৪ (মাসাকাদজা ৫৬, টেলর ৪৪; এনামুল ৬/৪৫)।
ফল: বাংলাদেশ ২২৬ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: এনামুল হক জুনিয়র।
সেন্ট ভিনসেন্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
(৯-১৩ জুলাই, ২০০৯; প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বোর্ডের সঙ্গে জটিলতা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক ক্রিকেটার নেই। খর্বশক্তির সেই দলের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিজেদের ৬০তম ম্যাচে প্রথম ইনিংসে কোন ফিফটি ছাড়াই ২৩৮ রান তুলেছিল টাইগাররা। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০৭ রান তোলে। ৬৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের (১২৮) প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ৩৪৫ রান তুলে ২৭৬ রানের লিড নেয়। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানে গুটিয়ে দেয়। ৯৫ রানে জয়ের সেই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নায়ক।
বাংলাদেশ: ২৩৮ (মাশরাফি ৩৯, মুশফিক ৩৬; রোচ ৩/৪৬) এবং ৩৪৫ (তামিম ১২৮, জুনায়েদ ৭৮; স্যামি ৫/৭০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩০৭ (ফিলিপস ৯৪, মাহমুদউল্লাহ ৩/৫৯, রুবেল ৩/৭৬) এবং ১৮১ (বার্নার্ড ৫২*, মাহমুদউল্লাহ ৫/৫১, সাকিব ৩/৩৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সেন্ট জর্জ, গ্রেনাডা
(১৭-২০ জুলাই, ২০০৯; প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
পরেই ম্যাচেই আরেকটি দুর্দান্ত জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ২৩৭ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে ক্যারিবীয়রা দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৯ রানে অলআউট হলে ২১৫ রানের লক্ষ্য পায় টাইগাররা। এক পর্যায়ে ৬৭ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন সাকিব। ১৩ চার ও ১ ছয়ে ৯৭ বলে অপরাজিত ৯৬ রান। কেমার রোচকে ছয় মেরে বাংলাদেশকে এনে দেন অসাধারণ এক জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার ম্যাচে ৪ উইকেটে জয়। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসেও ৭০ রানে ৫ উইকেট, পরে ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি; সাকিবে ষোলোকলা পূর্ণ হয় জয়ের হাসিতে।
বাংলাদেশ: ২৩২ (মুশফিক ৪৮, রকিবুল ৪৪, রোচ ৬/৪৮) এবং ২১৭/৬ (সাকিব ৯৬*, রকিবুল ৬৫, স্যামি ৫/৫৫)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৩৭ (ডাওলিন ৯৪, মাহমুদউল্লাহ ৩/৪৪, সাকিব ৩/৫৯) এবং ২০৯ (বার্নার্ড ৬৯, সাকিব ৫/৬৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব, জিম্বাবুয়ে
(২৫-২৯ এপ্রিল, ২০১৩; প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)
সিরিজের প্রথম টেস্টে হারের ক্ষত। দ্বিতীয় টেস্টেই তাতে প্রলেপ। প্রথম ইনিংসে ৩৯১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে করে ২৮২! ১০৯ রানের লিড টাইগারদের। দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিক-সাকিবের ব্যাটে ভর দিয়ে ২৯১ রান করার পর তাই জিম্বাবুয়েকে ৪০১ রানের বড় লক্ষ্যই দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা পৌঁছাতে পারল কেবল ২৫৭ পর্যন্তই। লাল-সবুজের দল ১৪৩ রানে জয়ী। পেসার রবিউল প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১টি, দুই ইনিংসে ২৪ ও ৪ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ সেরা।
বাংলাদেশ: ৩৯১ (সাকিব ৮১, নাসির ৭৭, মুশফিক ৬০; চিগুম্বুরা ৩/৭৫) এবং ২৯১/৯ (মুশফিক ৯৩, সাকিব ৫৯, নাসির ৬৭*; মাসাকাদজা ৪/৫৮)
জিম্বাবুয়ে: ২৮২ (চিগুম্বুরা ৮৬, রবিউল ৫/৮৫) এবং ২৫৭ (মাসাকাদজা ১১১*, জিয়াউর ৪/৬৩)।
ফল: বাংলাদেশ ১৪৩ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: রবিউল ইসলাম।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর
(২৫-২৭ অক্টোবর, ২০১৪; প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)
তিন টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। মিরপুরে প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের ২৪০ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর ২৫৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুলের ঘূর্ণিতে জিম্বাবুয়ে ১১৪ রানে অলআউট। চতুর্থ ইনিংসে ১০১ রান তাড়া করতে নেমে ৮২ রানে ৭ উইকেট নেই স্বাগতিকদের। স্নায়ুচাপ সামলে তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে জয়ে নোঙর ফেলেন মুশফিক। ৩ উইকেটের জয়।
জিম্বাবুয়ে: ২৪০ (রাজা ৫১; সাকিব ৬/৫৯) এবং ১১৪ (টেলর ৪২*; তাইজুল ৮/৩৯)।
বাংলাদেশ: ২৫৪ (মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৩; পানিয়াঙ্গারা ৫/৫৯) এবং ১০১/৭ (মাহমুদউল্লাহ ২৮, মুশফিক ২৩*; চিগুম্বুরা ৪/৪১)।
ফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: তাইজুল ইসলাম।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম, খুলনা
(৩-৭ নভেম্বর, ২০১৪; প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি কেবল সাকিব বা বাংলাদেশই নয়, পুরো ক্রিকেটবিশ্বই মনে রাখবে। সাকিবের দারুণ কীর্তির জন্য। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেটের অনন্য অর্জন। যেটি সাকিবকে ইয়ান বোথাম-ইমরান খানের পর তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে এই কীর্তির পাশে বসিয়ে দেয়।
ম্যাচে প্রথম ইনিংসে সাকিবের ১৩৭ রানে ভর করে ৪৩৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দুই সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ে অবশ্য ৩৬৮ রান তুলে ভালোই জবাব দিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২৪৮ রান তুললে ড্রয়ের সম্ভাবনাই জাগে। পঞ্চম দিনের শেষ সেশনে জিম্বাবুয়ে খেই হারিয়ে ফেলে সাকিব-তাইজুলের ঘূর্ণিতে। প্রথম ইনিংসে ৮০ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে ৫ উইকেট সাকিবের। বাংলাদেশ জেতে ১৬২ রানে।
বাংলাদেশ: ৪৩৩ (তামিম ১০৯, সাকিব ১৩৭, পানিয়াঙ্গারা ২/৪৯) এবং ২৪৮/৯ (মাহমুদউল্লাহ ৭১, শুভাগত ৫০; ওয়ালার ৪/৫৯)।
জিম্বাবুয়ে: ৩৬৮ (মাসাকাদজা ১৫৮, চাকাভা ১০১; সাকিব ৫/৮০, তাইজুল ৩/৯৬) এবং ১৫১ (মাসাকাদজা ৬১, সাকিব ৫/৪৪, তাইজুল ৩/৪৪)।
ফল: বাংলাদেশ ১৬২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম
(১২-১৬ নভেম্বর, ২০১৪, প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে)
সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তামিম-ইমরুলের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৫০৩ রানের বড় সংগ্রহ বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ৩৭৪! দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হকের অপরাজিত সেঞ্চুরি, ৫ উইকেটে ৩১৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা টাইগারদের। চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ে পাহাড় সমান লক্ষ্যের সামনে পড়ে বড় পরাজয় দেখে। বাংলাদেশ ৩-০ তে সিরিজ জেতে। মুমিনুলই সেরা সেই ম্যাচে।
বাংলাদেশ: ৫০৩ (ইমরুল ১৩০, তামিম ১০৯; রাজা ৩/১২৩) এবং ৩১৯/৫ (মুমিনুল ১৩১*; পানিয়াঙ্গারা ২/৩১)।
জিম্বাবুয়ে: ৩৭৪ (চিগুম্বুরা ৮৮, জুবায়ের ৫/৯৬) এবং ২৬২ (চাকাভা ৮৯, রুবেল ২/১৬, শফিউল ২/১৭)।
ফল: বাংলাদেশ ১৮৬ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মুমিনুল হক।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর
(২৮ অক্টোবর-১ নভেম্বর, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড)
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটের ফ্লাডলাইট ভেদ করে অস্তমিত সূর্যকে ছাপিয়ে যেদিন নবযুগের সূচনা হয়েছিল, দিনটি ৩০ অক্টোবর ২০১৬, রোববার। এদিন মিরাজ-সাকিবের ঘূর্ণি বলের মায়া যাদুতে ইতিহাসের কপালে চুমো আঁকে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট করে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি ১০৮ রানে জিতে নেয় টাইগাররা। সেই সঙ্গে সমতা ফেরায় সিরিজে।
মিরপুরে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২২০ রান তুলে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৪ রানে ৮ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড আদিল রশিদ ও ক্রিস ওকসের দৃঢ়তায় নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৪৪ রান তুলে ২৪ রানের লিড নেয়। পরে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৯৬ রানে থামে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। যাতে ইংল্যান্ডের সামনে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়। সেটি তাড়া করতে যেয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে ইংলিশরা।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৭ রানে ৬ উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসেও ৮২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন এই তরুণ অফস্পিনার। সেটি তাকে ম্যাচ ও সিরিজ সেরার আসনে বসিয়ে দেয়। সঙ্গে দুই টেস্টের ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার দেখা পাওয়া ৬ উইকেটের কীর্তিতে ১২৯ বছরের পুরনো বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছেন তিনি।
অভিষেকের পর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট নেয়ার কীর্তি এখন মিরাজের। অভিষেকের পর প্রথম দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট নেয়ার বিশ্বরেকর্ড এতদিন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বাঁহাতি পেসার জন জেমস প্যারিসের দখলে ছিল। ১৮৮৬-৮৭ মৌসুমে এই কীর্তি গড়েন তিনি। সেই কীর্তিকে ছাপিয়ে গেলেন মিরাজ। তার উইকেট এখন ১৯টি। চট্টগ্রামে অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে (৬+১) ৭ উইকেট নেয়ার পর ঢাকা টেস্টে (৬+৬) উইকেট নিয়েছেন এই তরুণ।
সঙ্গে মাত্র দুই টেস্টে ৩ বার ৫ বা ততোধিক উইকেট নিয়ে অভিজাত এক ক্লাবেও জায়গা করে নিয়েছেন মিরাজ। তার আগে টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম দুই ম্যাচে তিনবার ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়া অপর চারজন হলেন- নরেন্দ্র হিরওয়ানি, ক্লারি গ্রিমেট, টম রিচার্ডসন, সিডনি বার্নেস ও রডনি হগ।
বাংলাদেশ: ২২০ (তামিম ১০৪, মুমিনুল ৬৬; মঈন ৫/৫৭) এবং ২৯৬ (ইমরুল ৭৮, মাহমুদউল্লাহ ৪৭; রশিদ ৪/৫২)।
ইংল্যান্ড: ২৪৪ (রুট ৫৬, মিরাজ ৬/৮২, তাইজুল ৩/৬৫) এবং ১৬৪ (কুক ৫৯, ডাকেট ৫৬; মিরাজ ৬/৭৭, সাকিব ৪/৪৯)
ফল: বাংলাদেশ ১০৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ।
পি সারা স্টেডিয়াম, কলম্বো
(১৫-১৯ মার্চ, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা)
বাংলাদেশের শততম টেস্টের মাইলফলক। ম্যাচে চড়াই-উতরাই। টেস্টের সবটুকু রং বিছানো ২২ গজের ক্যানভাসে। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ৩৩৮। জবাবে সাকিবের ১১৬, সৌম্যর ৬১ আর মোসাদ্দেকের ৭৫ রানে ৪৬৭ রানের সংগ্রহ সফরকারীদের। ১২৯ রানের লিড পায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে করুনারত্নের ১২৬ আর পেরারা (৫০) ও সান্দাকানের (৪২) রানে ৩১৯ রান তোলে স্বাগতিকরা। ১৯১ রানের লক্ষ্যে ছুটতে যেয়ে তামিম ৮২ ও সাব্বিরের ৪১ রানের পরও ঝুঁকিতে ছিল বাংলাদেশ। ২২ রানে অপরাজিত থেকে যেটি শেষ করে আসেন অধিনায়ক মুশফিক।
বাংলাদেশ: ৪৬৭ (সাকিব ১১৬, সৌম্য ৬১, মোসাদ্দেক ৭৫; হেরাথ ৪/৮২, সান্দাকান ৪/১৪০) এবং ১৯১ (তামিম ৮২; হেরাথ ৩/৭৫)।
শ্রীলঙ্কা: ৩৩৮ (চান্দিমাল ১৩৮, মিরাজ ৩/৯০) এবং ৩১৯ (করুনারত্নে ১২৬, পেরেরা ৫০; সাকিব ৪/৭৪, মোস্তাফিজ ৩/৭৮)।
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: তামিম ইকবাল।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর
(২৭-৩০ আগস্ট, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া)
বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা প্রমাণের ম্যাচ। ১১ বছর পর এসেছে অস্ট্রেলিয়া। মাঝে চড়াই-উতরাই পেরিয়ে থিতু হওয়ার পথে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ তোলে ২৬০। তামিম ৭১ ও সাকিব ৮৪ রানের অবদান রাখেন। জবাবে অজিরা জমা করে ২১৭। সাকিবের ৫ উইকেট। টেস্ট খেলুড়ে নয় দেশের বিপক্ষে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়ার চক্রপূরণ। স্বাগতিকদের লিড ৪৩ রানের। পরে তামিমের ৭৮ ও মুশফিকের ৪১ রানে ২২১ রানে থামে টাইগাররা। অজিদের সামনে লক্ষ্য ২৬৫। আবারও ত্রাতা সাকিব, ফের পাঁচ উইকেট। সঙ্গে তাইজুলের ৩ উইকেট। ওয়ার্নারের ১১২ বিফলে। জয়টি ২০ রানের।
বাংলাদেশ: ২৬০ (তামিম ৭১, সাকিব ৮৪, মুশফিক ১৮, নাসির ২৩, মিরাজ ১৮, শফিউল ১৩; কামিন্স ৩/৬৩, লায়ন ৩/৭৯, অ্যাগার ৩/৪৬) এবং ২২১ (তামিম ৭৮, সৌম্য ১৫, মুশফিক ৪১, সাব্বির ২২, মিরাজ ২৬; লায়ন ৬/৮২, অ্যাগার ২/৫৫, কামিন্স ১/৩৮)
অস্ট্রেলিয়া: ২১৭ (রেনশ ৪৫, হ্যান্ডসকম্ব ৩৩, অ্যাগার ৪১*; মিরাজ ৩/৬২, সাকিব ৫/৬৮, তাইজুল ১/৩২) এবং ২৪৪ (ওয়ার্নার ১১২, স্মিথ ৩৭, হ্যান্ডসকম্ব ১৫; মিরাজ ২/১৯, সাকিব ৫/৮৫ , তাইজুল ৩/৬০)
ফল: বাংলাদেশ ২০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান।