মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে দেশটির সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পাচ্ছে না সেখানকার হিন্দুরাও। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর ৪২২ জন।
এদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। নিকটাত্মীয়দের বাসায় তারা আশ্রয় নিয়েছেনআশ্রয় নেওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জানিয়েছেন, আটটি হিন্দু পরিবারের ৬২ জন স্বজন হারিয়েছে। এমন আরও শতাধিক হিন্দু পরিবার আটকে আছে মিয়ানমার সীমান্তে। সেখানে প্রায় সাড়ে ৬০০ নারী-পুরুষ ও শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা কোনো রকম জীবন বাঁচিয়ে মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়েছেন। পেছনে ফেলে রেখে এসেছেন স্বজনের লাশ। তাদের গ্রামে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় ৬২ জন পুরুষকে। লুট করা হয় বাড়িঘর। তবে শর্ত সাপেক্ষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তারা উঠেছিলেন, কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে। পরে কক্সবাজারের উখিয়ায় তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছে রাখা হয়। তাদের জিম্মাদার হয়েছেন স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। এর আগে মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মের রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এবারই প্রথম কোনো হিন্দু পরিবার বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ১৮ হাজার নির্যাতিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান করছে। আরাকানে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দুরাও সে দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ফলে হিন্দুরাও পালিয়ে আসছে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। বুধবার দুপুরে আইওএমের হেড অব সাব অফিস সংযুক্তা সাহানি নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। সংযুক্তা সাহানি আরও জানান, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন-দমন-পীড়ন সহ্য করতে না পেরে এসব নির্যাতিত মুসলমান বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। দুই দেশের শূন্য রেখায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এসব মানুষের জীবন বাঁচানো এখন খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।