খুলনা প্রতিনিধি : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘শিক্ষকেরা কোচিং-বাণিজ্য করতে পারবেন না। বাড়িতে শিক্ষার্থী নিয়ে গিয়ে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। কোনো নোট বা গাইড বই চলবে না। এগুলো বন্ধে আইন তৈরি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না।’ অবশ্য এসময় হলভর্তি যেসব শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই এখনও আইন ও নীতিমালার তোয়াক্কা করে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য।
আজ বুধবার খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ মিলনায়তনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষার গুণগত মান ও নৈতিকতার উন্নয়ন এবং জঙ্গিবাদবিরোধী ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চল।
শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেন শিক্ষার্থীরা যায় আপনাদের বাড়িতে পড়তে? ক্লাসে ভালো করে পড়ানো হয় না বলেই তো সেখানে যায়। শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয় পড়তে যেতে। এটা করে কেউ রেহাই পাবেন না। কারণ, এতে আমাদের সব শিক্ষকের বাঁচার দলিল “ইজ্জত” নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা পরিবারের মধ্যে এবং আমাদের মাথার মধ্যে যদি পোকা ঢুকে যায়, তাহলে আমরা যাব কোথায়? তাই আমাদের সবার নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, নিষ্ঠা যেন কলুষিত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষকেরা যদি নৈতিকতা ও আদর্শ শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়, তাহলে দেশের সর্বনাশ। কেবল অর্থ নয়, মানমর্যাদাই হচ্ছে শিক্ষকদের বড় সম্পদ। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পাশাপাশি ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। শ্রেণিকক্ষে তাদের আরও বেশি পাঠদান করতে হবে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রী বলেন, সরকার ইতিমধ্যে দেশে জঙ্গিবাদবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। কিছু কিছু শিক্ষার্থী কানমন্ত্রে আকৃষ্ট হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। তাই আর যাতে দেশে জঙ্গিবাদ না আসতে পারে, এ জন্য শিক্ষক-অভিভাবকসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে ও এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাউশি খুলনা অঞ্চলের পরিচালক টি এম জাকির হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।