মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলায় ভারতের আসাম রাজ্যের এক নেত্রীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
গত বৃহস্পতিবার বিজেপির আসাম রাজ্য শাখার প্রধান এক চিঠির মাধ্যমে বেনজির আরফান নামের ওই নেত্রীকে বহিষ্কার করেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেনজির রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে মুসলিমদের রোজা রাখার আহ্বান জানান। শনিবার ‘ইউনাইটেড মাইনরিটি ফোরাম’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার আয়োজনে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
এর আগে আরফানের দেওয়া ওই ফেসবুক পোস্টে বিজেপিতে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়। বিজেপি বরাবরই রোহিঙ্গাদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার বিপক্ষে। সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন এই দলটির নেতৃস্থানীয়রা দেশটি থেকে সব শরণার্থীকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
আরফানের ওই ফেসবুক পোস্টের পর বিজেপি নেতা দিলিপ সাইকিয়া তাঁকে বরখাস্ত করে একটি চিঠি পাঠান। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলেন।
চিঠিতে লেখা হয়, ‘বিজেপির সক্রিয় সদস্য হওয়া সত্ত্বেও আপনি রোহিঙ্গা সমর্থনে আরেকটি সংস্থার আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশের সমর্থনে কথা বলেছেন। কিন্তু দলের কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেননি।’
‘আপনার এই কাজকে দলের নীতি ও আদর্শবিরোধী বিবেচনা করে বিজেপির রাজ্যপ্রধান আপনাকে দলের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিলেন।’
এ বিষয়ে আরফান বলেন, ‘আমার একমাত্র ভুল হলো মিয়ানমার থেকে পালাতে গিয়ে হত্যার শিকার হিন্দু ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের জন্য রোজা রাখতে বলেছিলাম। আমাকে রোজার বদলে প্রার্থনার কথা বলা উচিত ছিল। ভুল শব্দ ব্যবহারের জন্য আমি ক্ষমা চাই। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে আমার কথা শোনা হয়নি।’
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর দেশটির প্রায় চার লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। মিয়ানমারের এ ধরনের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। ভারতও রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেয়।