মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া খাদিজার (২০) পৃথিবী আলো করে এসেছে এক কন্যা সন্তান। তিনি সদ্যপ্রসূত এই শিশুটির নাম রেখেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগলে রাখায় প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ব গণমাধ্যম অ্যাখ্যায়িত করেছে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই রোহিঙ্গা শিশুর এই নামকরণ।
সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গত ২৬ দিনে ১৭৩ রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। এই হিসাবে এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত থেকে আটটি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে। এছাড়া রাখাইনে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সন্তানসম্ভবা আরও প্রায় ৭০ হাজার নারী।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে খাদিজার (২০) স্বামীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে দেশটির সেনারা। এরপর নিজ ভিটা-মাটি ছেড়ে মা ও বোনকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন এই নারী। ছয় জনের পরিবারের মধ্যে বাকিরা হত্যার শিকার হয়।
আট মাসের সন্তানকে গর্ভে নিয়ে তার মা আলুম বাহারের সঙ্গে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন খাদিজা। নীল-কালো রঙের বোরকা পরা খাদিজা সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন সাংবাদিকদের।
তিনি বলেন, গোটা রাখাইন রাজ্য আগুনে পুড়ছে। আমার ঘরও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছি। গর্ভে আট মাসের সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করেছি। এখানে এসে এক মেয়ে সন্তানের জন্ম দেই। মিয়ানমারে আমার স্বামীকে হারিয়েছি। এখানে এসে একটা কন্যা সন্তানের জন্ম দেই। সন্তানের নাম রেখেছি শেখ হাসিনা।
খাদিজার মা আলুম বাহার বলেন, অনেক কষ্ট নিয়ে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। আমার মেয়ে গর্ভবতী ছিলো। সে এখানে এসে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তার নাম শেখ হাসিনা রেখেছি। নতুন জীবনের আশার আলো নিয়ে এসেছে সে। এখন হয়তো আমাদের জীবনে কিছুটা শান্তি আসবে।