স্পোর্টস ডেস্ক : বৃষ্টির আশঙ্কা মাথায় নিয়েই পচেফস্ট্রুমে পঞ্চম দিনে মাঠে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ। আগের দিন ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ব্যাকফুটে থেকেই ব্যাট করছিল সফরকারীরা। সেই ভয়টাই শেষ পর্যন্ত পেয়ে বসে বাংলাদেশকে। রাবাদার আক্রমণে শুরুতে বিপর্যস্ত হয়ে বাংলাদেশ ৪২৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ৯০ রানেই! প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়াদের ৪৯৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ৩২০ রান। অথচ সেই বাংলাদেশই দ্বিতীয় ইনিংসে দিতে পারেনি কোনও প্রতিরোধ।প্রোটিয়াদের বোলিংয়ে বাংলাদেশ এতটাই অসহায় হয়ে পড়ে যে প্রথম সেশনেই ২৬ রানে ৬ উইকেট হারায় সফরকারী দল! সেই অসহায় বাংলাদেশের হারের ব্যবধানও ছিল বিশাল। এই টেস্টে বাংলাদেশ হারলো ৩৩৩ রানে।
দিনের শুরুতে রাবাদার লাফিয়ে উঠা বলে স্লিপে আউট সাইড এজ হয়ে ফেরেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৫৫ বলে ১৬ রানে ফেরেন মুশফিক। কিছুক্ষণ পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও অসহায় আত্মসমর্পণ করেন। সেই রাবাদার বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন দুই ওভারের মধ্যেই। রিয়াদ বিদায় নেন ৯ রানে।
লিটন দাস নেমেও কিছু করতে পারেননি। আসা যাওয়ার মিছিলে এবার যোগ হন তিনি। রাবাদার বলে এলবিডব্লিউ হন। রিভিউ নিলেও বেঁচে যাওয়ার সুযোগটাও পাননি। এরপর মহারাজের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন সাব্বির। এরপর ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। একে একে লেজ ছেঁটে ফেলতে থাকেন স্বাগতিকরা। বিদায় নেন তাসকিন ও শফিউল তাসকিন মহারাজের স্পিনে এলবিডাব্লিউতে ঘায়েল হলেও রানআউট হন শফিউল।
এরপর কিছুক্ষণ মোস্তাফিজকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু মহারাজ মোস্তাফিজকে ফিরতি বলে তালুবন্দী করলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
২৫ রানে ৪ উইকেট নেন মহারাজ। আর ৩ উইকেট নেন দিনের শুরুর দিকে ধস নামানো রাবাদা। আগের দিন দুটি নেন মরকেল।
আগের দিন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকে ত্রাস ছড়িয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার মরনে মরকেল। আর সেই পেসারই রয়েছেন ইনজুরিতে। আজকে তিনি মাঠে নামেননি। তার জায়গা বদলি হয়েছেন পারনেল। সাইড স্ট্রেইনের চোটে পড়েছেন প্রোটিয়া এই পেসার। এই অবস্থায় দ্বিতীয় টেস্টেও মরকেল থাকবেন কিনা সেটা নিশ্চিত নয়।
চতুর্থ দিনের শেষ দিকে শুরুর দিকে দ্রুত দুটি উইকেট তুলে নেন মরকেল। মুশফিককেও বোল্ড করেছিলেন। কিন্তু নো বল হওয়াতেই রক্ষা পান বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে তামিমকে দুর্দান্ত এক বলে করেন বোল্ড। শেষ বলে মুমিনুলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বল লেগ স্টাম্প মিস করেছিল। পরের ওভারে মুশফিকের মিডল স্টাম্প উপড়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু অবৈধ ডেলিভারি হওয়াতে উইকেটটি আর পাননি তিনি। ষষ্ঠ ওভারেই মাঠ ছেড়ে যান মরকেল। এরপর মহারাজের স্পিনে ফেরেন ইমরুল কায়েস (৩২)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৪৯৬/৩ (এলগার ১৯৯, আমলা ১৩৭) ডি. ও দ্বিতীয় ইনিংস ২৪৭/৬ ডি. (বাভুমা ৭১, ডু প্লেসিস ৮১; মুমিনুল ৩/২৭)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৩২০/১০ (মুমিনুল ৭৭, মাহমুদউল্লাহ ৬৬; মহারাজ ৩/৯২) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৯০/১০ (কায়েস ৩২; মহারাজ ৪/২৫)