ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ‘সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে’র একটি দল এসপি, ওসির ৫৭৭টি নকল সিলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। গতকাল বুধবার ফকিরাপুল এলাকার কোমর গলির হাসেম আলীর বাড়ি থেকে এই পাঁচ জালিয়াতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জালিয়াতচক্রটি জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (পিসিসি) ও নকল সিল তৈরি করত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্যগুলো জানান ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আবদুল বারিক, মো. মোহাম্মদ আলী, মো. সাব্বির হোসেন, মো. শহিদুল হক নিজাম ও মো. মোরশেদ ভূঁইয়া। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ও বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সিলসহ মোট নকল সিল ৫৭৭টি, ১৪৫০টি পিসিসি, দুটি কম্পিউটার ও একটি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পিসিসি সার্টিফিকেট তৈরি করতেন। এরপর সেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে ট্র্যাভেল এজেন্সিতে সরবরাহ করতেন।
মো. আবদুল বাতেন আরো জানান, পিসিসি রাষ্ট্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সনদ। এর মাধ্যমে নাগরিকের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হয়। বিদেশ যাওয়ার পর সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমেই ওই ব্যক্তির স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু কিছু অসাধু ট্র্যাভেল এজেন্সি বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে চুক্তির মাধ্যমে জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয়।
আবদুল বাতেন আরো বলেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে কোনো হয়রানির শিকার হতে হয় না। যে কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে পারে। এই সার্টিফিকেট পেতে হলে প্রথমে ব্যাংকে ৫০০ টাকা জমা দিয়ে টাকার রসিদসহ পুলিশ সুপারের অফিস বরাবর আবেদন করতে হয়। তারপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এখানে ঝামেলার কোনো বিষয় নেই বলেও উল্লেখ করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা। তাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সঠিক উপায়ে পুলিশের মাধ্যমে সংগ্রহ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।