নিজস্ব প্রতিবেদক : আমদানিকৃত কৃষি ও খাদ্যজাতীয় পণ্য টেস্টের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ভোমরাস্থল বন্দরের কোয়ারেইনটেন্ড’র অফিসের হেড ক্লার্ক জাহিদের বিরুদ্ধে। দাবিকৃত টাকা না দিলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দরের একাধিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত পিয়াজ, আদা, ফল, চাউল, গমসহ খাদ্যজাতীয় পণ্য কোয়ারেইনটেন্ড এর মাধ্যমে টেস্ট করার নির্দেশনা রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তাদের টেস্ট রিপোর্ট পাওয়ার পর উক্ত মামলা কাস্টম ছাড় করা হয়। সে অনুযায়ী কোয়ারেইনটেন্ড অফিসে আমদানিকৃত ওই পণ্যের টেস্ট করাতে গেলে হেড ক্লার্ক জাহিদের তোপের মুখে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। তবে তার চাহিদা মত টাকা দিলেই সহজে ছাড়পত্র দিয়ে দেন তিনি। তা না হলে বিভিন্ন অজুহাতে বিলম্ব করেন। এতে করে আমদানিকৃত ওইসব খাদ্য জাতীয় পন্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সিএন্ডএফ কর্মচারীদের সাথে অমানবিক আচারণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
উক্ত খাদ্য জাতীয় পন্য বন্দরে প্রবেশের পর আমদানি কারকগণ ঢাকা অফিস থেকে আইপি করার পর উক্ত ছাড়পত্রের এক কপি ঢাকা অফিস ভোমরা অফিসে পাঠান এবং আমদানি কারকের কাছে এক কপি পাঠান। এরপর আমদানি কারকরা ওই কাগজপত্র স্থানীয় সিএন্ডএফ এজেন্টের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠান। যাতে করে উক্ত কাঁচামালগুলো দ্রুত ছাড় করানো যায়। সে অনুযায়ী সিএন্ডএফ এজেন্ট ওই কাগজপত্রগুলো প্রিন্ট করে কোয়ারেইনটেন্ড অফিসে নিয়ে গেলে হেড ক্লার্ক জাহিদ হাসান ই-মেইলে কোন কাগজ গ্রহণ করবেন না বলে ব্যবসায়ীদের জানান। এদিকে কুরিয়ারের মাধ্যমে ওই কাগজপত্র পাঠাতে গেলে সময় লাগে প্রায় ২/৩ দিন। এতে করে আমদানিকৃত পণ্যেগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। তবে ক্লার্ক জাহিদ কে টাকা আর কোন কিছুই লাগে না।
তারা আরো জানান, উক্ত মালামাল ছাড় করানো জন্য কোন টাকা নেওয়া কথা না থাকলেও হেড ক্লার্ক জাহিদ বিল অব এন্ট্রি প্রতি ৩ থেকে ৪শ টাকা আদায় করেন। এছাড়া আইপি জটিলতা দেখিয়ে বিল অব এন্ট্রি প্রতি আদায় করেন ৭ থেকে ৮ শ টাকা। এসব টাকা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে মালামাল ছাড় না করে তালবাহানা করতে থাকে। গড়ে দৈনিক প্রায় তার মাধ্যমে ৭৫ থেকে ৮০টি বিল অব এন্ট্রি হয়ে থাকে। আর এভাবেই হেড ক্লার্ক জাহিদ লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে নিজের পকেটস্থ করেন।
কোয়ারেইনটেন্ড’র ঢাকা হেড অফিসের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাকি জাহিদের নিকট আতœীয়। আর এ পরিচয় ব্যবহার করেই তিনি এসব অনিয়ম করে যাচ্ছেন তিনি।
অপরদিকে জাহিদের যথেচ্ছাচারের কারণে ব্যবসায়ীকভাবে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বলে ভোমরাবন্দরের ভুক্তভোগী একাধিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান। ব্যবসায়ীর অবিলম্বে উক্ত জাহিদের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এঘটনায় কোয়ারেইনটেন্ড অফিসের হেড ক্লার্ক জাহিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমাদের অফিসে কোন প্রকার টাকা পায়সা কিছুই লাগে না। ঢাকা অফিস থেকে কাগজপত্র পাওয়ার পর আমরা বৈধভাবে তাদের মালামালের ছাড় পত্র দেওয়া হয়। ঢাকা অফিস থেকে হার্ড কপি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারি না। এছাড়া ই-মেইলের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো বাংলাদেশে এটি চালু হয়নি। ইউরোপে হয়েছে। তাছাড়া সরকারের নিদের্শনাও রয়েছে হাতে হাতে কোন কাগজপত্র না নেওয়ার।
পূর্ববর্তী পোস্ট