একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সমন্বিত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে নিজ দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ তথ্য দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি শক্তিশালী ‘ডাটাবেজ’ তৈরি করবে দলটি। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় দফতর সম্পাদক একটা আবেদনপত্র তুলে দেন তৃণমূল নেতাদের হাতে। সে আবেদনপত্রে তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করে দফতরে জমা দেয়ার কথা ছিল। তবে তথ্য সমন্বয়হীনতার কারণে বিষয়টি ধীর গতিতে চলছে। এ তথ্য ভাণ্ডার বা ডাটাবেজটি তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে দলের গবেষণা সেল হিসেবে পরিচিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।
সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছিল বেশ আগেই। পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ভালো হওয়ায় এখন দেশব্যাপী এ কার্যক্রম চলছে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা/উপজেলা, পৌরসভা, জেলা এবং সিটি কর্পোরেশন থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব নেতার জন্য আলাদা প্রোফাইল তৈরি হবে।
জানা গেছে, প্রত্যেকের ফাইলে নাম, পদের নাম, ছবি, মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল অ্যাড্রেস, ফেসবুক আইডি, স্থায়ী ঠিকানা ও অস্থায়ী ঠিকানা লিপিবদ্ধ থাকবে।
সূত্র আরও জানায়, এখন রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। চলতি সপ্তাহে রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হবে। রংপুর বিভাগ শেষ হলে আরও দুটি বিভাগে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। আগামী মার্চের মধ্যে সারাদেশের নেতাকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
তথ্য সংগ্রহ ও ডাটাবেজ তৈরিতে যুক্ত এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। কিন্তু নিজ দলেরই এখন পর্যন্ত কোনো ডাটাবেজ নেই। তাই সারাদেশের নেতাদের মধ্যে একটি নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ গড়ে তোলার জন্যই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি জেলায় ৭-১০ জনের একটি করে টিম যাবে। ইতোমধ্যে ১০০ জনের মতো সাবেক ছাত্র নেতাকে তথ্য সংগ্রহের কাজে বাছাই করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথম দফায় ৬০ জনকে তথ্য সংগ্রহের কাজের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রত্যেকটি জেলার জন্য একজন টিম লিডার থাকবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একজনের জন্য একটি উপজেলার তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব থাকবে। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক উপজেলার জন্য একাধিক তথ্য সংগ্রহকারীও নিযুক্ত হতে পারেন।
আওয়ামী লীগের অপর এক নেতা জানান, মোবাইল-ইন্টারনেটের এ যুগেও দলের কেন্দ্রীয় একটি নির্দেশনা তৃণমূলে পৌঁছাতে অনেক সমস্যা হয়। দেশের সব নেতাদের এক সুতোয় বাঁধতে এটা অনেক বড় একটি কাজ হবে।