মোস্তাফিজুর রহমান : আশাশুনিতে লাইব্রেরিয়ান সার্টিফিকেট বিক্রি হলো ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকায়। জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বড়দল ইউনিয়নের বড়দল গ্রামের মোঃ ঈমান আলী গাজীর পুত্র মোঃ আজগর আলীর নিকট হতে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এ টাকা। আজগর আলী জানান, সে বর্তমানে বড়দল মোটর সাইকেল গ্যারেজে মোবাইলে ফ্লাক্সি লোডের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বড়দল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমীরন কান্তি বৌদ্ধ প্রায়ই তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসতো। সেই থেকে তার সাথে শিক্ষক সমীরনের পরিচয় হয়। হঠাৎ সমীরন তাকে (আজগর) বলে আমাদের স্কুলে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ হচ্ছে তুমি চাইলে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারো। প্রতি উত্তরে সে বলে আমার তো লাইব্রেরিয়ানের সার্টিফিকেট নাই। সমীরন তখন বলে তুমি নিরাকার সারের সাথে কথা বলো উনি হয়তো তোমার জন্য সার্টিফিকেট ম্যানেজ করে দিতে পারে। শুনেছি উনার স্ত্রীর জন্য কিভাবে সার্টিপিকেট সংগ্রহ করে দিয়েছে এবং সেই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সে চাকরিও করছে। এরপর তার পরিচয় হয় ইউনিয়নের নড়েরাবাদ গ্রামের পরেশ মন্ডরের পুত্র শ্রীউলা মাধ্যিমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিরাকার মন্ডলের সাথে। ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট দিতে রাজিও হয়ে যান তিনি। কিন্তু নিরাকারের তাকে বলে বিষয়টি কাহকে বলা যাবে না এমনকি টাকা লেনদেন হবে অন্য কারো মাধ্যমে। আজগর তখন টাকা লেনদেনের জন্য সমীরনকে বেচে নেয়। এবং বিভিন্ন সময়ে ক্যাশ এবং বিকাশের মাধ্যমে নিরাকারকে সার্টিফিকেটের বাবদ মোট ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা দেয়। জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরী না হওয়ার পর থেকে সমীরন সারের মাধ্যমে নিরাকার সারের কাছে টাকা ফেরৎ চইলে আমার সাথে এক বছর ধরে বিভিন্ন তালবাহানা করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার বসাবসিও হয়েছে। আজগর আরও জানায়, বসাবসিতে জানা যায়, তার নিকট হতে যতটাকা সমীরন নিয়েছে সব টাকা সে নিরাকাকে দিয়েছে। সর্বশেষ সম্প্রতি সমীরন তাকে বিষয়টি নিয়ে আর নাড়াচাড়া না করার অনুরোধে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মিমাংশা করে। আমিও তাদের সাথে বিষয়টি মীমাংসা করে নেই। পরে জানতে পারি এ ৬০ হাজার টাকা সমীরন সার নিজের পকেট থেকে দিয়েছে। নিরাকার সার সমীরন সারকে কোন টাকা দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে খাজরা ইউনিয়নের গজুয়া গ্রামের তারাপদ কান্তি বৌদ্ধের পুত্র বড়দল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমীরন কান্তি বৌদ্ধের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, নিরাকার টাকা লেনদেনের ব্যাপারে আজরকে বিশ্বাস করতে পারছিল না বিধায় আমাকে মাধ্যম করে নেয়। আর এই টাকা লেনদেনের মাধ্যম হয়েই তাকে ৬০ হাজার টাকা গুনগারি দিতে হল। আমার হাত দিয়ে আজগর যত টাকা দিয়েছে আমি সে টাকা নিরাকারকে দিয়ে দিয়েছি। এখন নিরাকার বলছে তাকে মোট ৫৭ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তদন্ত করলে নিরাকারের হাত দিয়ে এরকম জাল সার্টিফিকেট আরও হয়েছে কিনা সেটা জানা যাবে। নিরাকার মন্ডল আমাকে বলে তার স্ত্রীর সার্টিফিকেটও ঠিক এভাবে করা হয়েছে। নিরাকার তাকে আরও বলে এ সার্টিফিকেটে তার স্ত্রী গোয়ালডাংগা ফকিরবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাইব্রেরীয়ান পদে বহাল তবিয়তে চাকরি করে আসছে, বেতনও পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বড়দল ইউনিয়নের নড়েরাবাদ গ্রামের পরেশ মন্ডরের পুত্র শ্রীউলা মাধ্যিমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিরাকার মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আজগর লাইব্রেরীয়ান সার্টিফিকেট বানানোর জন্য সমীরন সারের মাধ্যমে আমাকে ৫৭ হাজার টাকা দেয়। চুক্তি ছিল ৬০ হাজার, ৩ হাজার টাকা কম দিয়েছে। কথামত আমি তাকে ঢাকা দারুল ইহসান ইনভার্সিটির লাইব্রেরিয়ানের সার্টিফিকেট এনে দিয়েছি। সার্টিফিকেট নিতে আমাকে তো সেখানে টাকা দিতে হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট