স্পোর্টস ডেস্ক: দিনের শেষ বলটিতে মাহমুদুল্লাহ আউট না হলে দিনটা বাংলাদেশের হয়েই থাকতো। শেষ বলে মাহমুদুল্লার আউটের মধ্য দিয়ে ১২৮ রানের লিড নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তুলেছে টাইগাররা।
ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসের পর আজ দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাট হাতে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল।
তবে দূর্দান্ত সূচনার পর অভিষিক্ত ইংলিশ বোলার জাফর আনসারির শিকার হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তামিমকে(৪০)। এরপর দলের রানের সঙ্গে মাত্র ১ রান যুক্ত হওয়ার পর প্যাভলিয়নের পথ ধরেন গত ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং উপহার দেওয়ার মুমিনুল হক(১)।
দলীয় ৬৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষ বিকেলের আলোতে দলকে সেই চাপ থেকে মুক্ত করেন আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহ। দারুণ বোঝাপড়ায় তারা দলকে নির্ভরযোগ্য অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে দ্বিতীয় দিনের শেষ বলে বাংলাদেশকে আবারও হতাশায় ডুবালেন মাহমুদউল্লাহ। জাফর আনসারীর ওভারের শেষ বলে মাহমুদউল্লাহ বোল্ড হওয়ায় ইমরুল-মাহমুদউল্লাহর ৮৬ রানের জুটিতে ছেদ পড়ে। সেই সঙ্গে শেষ হয় দিনের খেলাও।
ইমরুল কায়েস ৫৯ রান নিয়ে রোববার তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।
এর আগে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে ২৪৪ রানে অলআউট হয় সফরকারী ইংল্যান্ড। এতে ২৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং শুরু করে বাংলাদেশ।
১৪৪ রানে ইংলিশদের ৮ উইকেট তুলে নেয়ার পর বাংলাদেশের লিড নেয়ার সম্ভাবনা জেগেছিল।
কিন্তু সে সম্ভাবনায় ঘি ঢেলে দেন লেজের সারির ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ। নবম উইকেটে তারা ৯৯ রান তুলে ইংল্যান্ডকে দারুণভাবে খেলায় ফেরান।
এ জুটি ভাঙার এক রান বাদেই সফরকারীরা ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায়। বাংলাদেশী বোলারদের মধ্যে সফল মেহেদী হাসান মিরাজ।
চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টেও তিনি ৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন ৮২ রান খরচায়। এছাড়া তাইজুল ইসলাম ৩টি ও সাকিব আল হাসান নিয়েছেন একটি উইকেট।
তামিম ইকবালের শতক এবং মুমিনুলের অর্ধশতকের পরেও শুক্রবার প্রথম দিনেই বাংলাদেশ ২২০ রানে গুটিয়ে তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করে।
অবশ্য শেষ বিকালে ইংল্যান্ড ইনিংসে ধ্বংসলীলার আভাস দিয়ে রাখেন টাইগার বোলাররা।
শনিবার শুরুতেই তা বাস্তবায়ন করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। মিরপুরে ঢাকা টেস্টের সকালটা নিজেদের করে নেন দু’জন।
৩ উইকেটে দলের ৫০ রান নিয়ে শুরু করেন জো রুট ও মঈন আলী। দলীয় ৬৪ রানে মঈন আলীকে (১০) ক্লিন বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। এরপর দলীয় ৬৯ রানে বেন স্টোকসকে (০) মুমিনুলের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তাইজুল।
সেখান থেকে জো রুট ও জনি বেয়ারস্টো দলের হাল ধরেন। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, এই জুটি উইকেটে থিঁতু হতে চলেছে। কিন্তু ৪৫ রানের এই জুটি আবারও ভাঙেন মিরাজ তার ঘূর্ণিতে।
দলীয় ১১৪ রানে বেয়ারস্টোকে এলবিডব্লিউ করে নিজের চতুর্থ শিকার তুলে নেন তিনি। আর দলীয় ১৪০ রানে অভিষিক্ত জাফর আনসারিকে (১৩) দ্বিতীয় স্লিপে শুভাগত হোমের তালুবন্দি করে মিরাজ পঞ্চম শিকার পূর্ণ করেন।
আর প্রান্ত আগলে খেলা জো রুটকে দলীয় ১৪৪ রানে সাজঘরে পাঠান তাইজুল ইসলাম। এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তিনি করেন ৫৬ রান।
এরপর লেজের সারির ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ রীতিমত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ৯৯ রানের এ জুটির কাছে টাইগার বোলারদের খুবই অসহায় মনে হয়েছে।
কিন্তু নতুন বল নিয়ে সেই মিরাজই নিজের ষষ্ঠ শিকার তুলে প্রতিরোধ গুড়িয়ে দেন। তার বলে লেগ স্লিপে শুভাগত হোমের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ওকস করেন ৪৬ রান। এক রান বাদেই তাইজুল ইসলামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টিফেন ফিন। ২৪ রানের লিড পেয়ে ইংল্যান্ড থামে ২৪৪-এ। অপরপান্তে আদিল রশিদ ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
২৪ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস ঝড়ো শুরু করেন। তামিম ৪৭ বলে ৪০ রান করে আনসারীর বলে আউট হন। ওপেনিং জুটিতে ৬৫ রান তোলেন তারা। তামিমের পর দ্রুতই আউট হন মুমিনুল হক। তিনি মাত্র ১ রান করে বেন স্টোকসের বলে আউট হন।
তবে ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে ৮৬ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দিনের শেষ ওভারে এসে জাফর আনসারীর শিকার হন রিয়াদ। তিনি ৪৭ রান করেন।
শুক্রবার সিরিজের শেষ টেস্টে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ভালো শুরু করেও ২২০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৪৯ রানে শেষ ৯ উইকেট হারায় সফরকারীরা।