অনলাইন ডেস্ক: বৃহস্পতিবার সকাল। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কক্ষে দেখা গেল ফুটফুটে এক শিশুকে। তার শরীরে কিছু ক্ষতচিহ্ন। স্পষ্টতই আঘাতের চিহ্ন। হাতে কী জানতে চাইলে শিশুটি ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে বলে, ‘আম্মু কামড়াইসে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের বল্লালবাড়ী এলাকার একটি বাড়িতে কাজ করে শিশুটি। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ওই এলাকার সিরাজ মিয়ার বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুচ আলী জানান, ওই শিশু গৃহকর্মী এখন সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগ থাকা গৃহকর্ত্রী কল্পনা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, শিশুটির বাবাকে পাওয়া গেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। শিশুটিকে কার হেফাজতে দেবে, সেটি আদালতের বিষয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, মা মারা যাওয়ার পর শিশুটিকে সিরাজ মিয়ার স্ত্রী কল্পনা বেগম পালক আনেন। পরে ওই বাড়িতে সিরাজ মিয়ার বাড়ির গৃহকর্মী হয়ে ওঠে শিশুটি।
স্থানীয় কয়েকজনের অভিযোগ, দিনের পর দিন শিশুটিকে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে গৃহকর্ত্রী কল্পনা বেগম। তার শরীরে আগুনের ছ্যাঁকা ও চোখে-মুখে মারধর করা হয়েছে।
বুধবার অমানুষিক নির্যাতন করার একপর্যায়ে এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। পরে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায় শিশুকে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শৈবাল বসাক জানান, শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া দরকার। অন্যথায় সে বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হতে পারে।
নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহকর্ত্রী কল্পনা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে আমি মারব, কাটব। আপনাদের কী? হউক সুবর্ণা আমার পালক মেয়ে।’