আব্দুল জলিল: সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রতি কেজি দশ টাকা দরে চাল বিতরণে নয় ছয় কারবার চলছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নে এই কার্ডের বাহক হয়েছেন দালান বাড়ির মালিক, ধনী লোক। বিদেশে চাকুরিরত ব্যক্তির পরিবার, জমির মালিক, হোটেল মালিক এমনকি দোকানমালিকরাও এই কার্ডের অধিকারী হয়েছেন। তারা ডিলারের কাছ থেকে গ্রহন করছেন ১০ টাকা কেজি দরের চাল। তবে ইউপি চেয়ারম্যান এসব অভিযাগে অস্বীকার করে বলেছেন, তার প্রতিপক্ষের লোকজন এসব অপপ্রচার দিচ্ছে।
এদিকে চাল নিতে আসা কার্ডধারীরা অভিযোগ করে বলেন তাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা নগদ নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এজন্য এলাকায় আগে থেকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে সঙ্গে ওই টাকা নিয়ে আসতে। যিনি টাকা আনতে পারছেন না তাকে চাল দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান তারা।
কার্ডধারীদের তালিকায় রয়েছেন বাঁশদহা ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেনের তিন মেয়ে। কার্ডধারী নাজিরা খাতুন এলাকার ধনী ব্যক্তি লিয়াকত হোসেনের স্ত্রী। বিদেশে চাকুরিরত এবাদুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা খাতুন, ধনী ব্যক্তি আবদুল মোতালেবের ছেলে মুরাদ, আমজাদের স্ত্রী আকলিমা খাতুন, আবদুল গনির ছেলে দেলোয়ার হোসেন, তলুইগাছার আবদুর রহমান, বাকাউল্লাহর ছেলে সলেমান ভাগ্যবান কার্ডধারী। তবে আবদুল খালেক দরিদ্র মানুষ হলেও তিনি কার্ড পাননি। ভিন্ন পরিবারে বসবাস করা তার ধনী ছেলে আবুল বাসার এই কার্ড পেয়েছেন ভাগ্যজোরে। কার্ড পেয়েছেন ধনী ব্যক্তি আমিনুর রহমান ও ভূমিজরিপকারী মো. আলাউদ্দিন। স্থানীয়রা বলেন চেয়ারম্যানের নিকট আত্মীয় বিশেষ করে খালাতো ভাই চাচাতে ভাই ফুফাতো ভাইয়ের পরিবারও এসব কার্ডের অধিকারী হয়েছে। চেয়ারম্যানের আত্মীয় হওয়ায় ভিন্ন ইউনিয়নের সাতানি গ্রামে বাস করেও দশ টাকা দরের চালের কার্ডের অধিকারী হয়েছেন শফিকুল ইসলাম।
বাঁশদহা ইউনিয়নের দুইজন ডিলার আনসার আলি ও খোরশেদ আলম লাবলুর মাধ্যমে প্রায় এক হাজার দুইশ’ কার্ডধারীকে এই চাল দেওয়া হচ্ছে। ডিলাররা জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ এর লোকজন এসব টাকা নেয়। ডিলাররা ৩শ টাকা নিয়ে ৩০ কেজি চাল বিতরণ করছেন বলে জানান।
কার্ড বিতরনে অনিয়ম এবং কার্ডধারীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন ‘নতুন কার্ডে ওসব নাম নেই’। তার ইউনিয়নে কতজনকে এই কার্ড দেওয়া হয়েছে তার হিসাব তিনি দিতে পারেন নি। বলেছেন ইউপি সচিব জানেন । সচিবের মোবাইল নম্বরও তার জানা নেই বলে জানান তিনি।
জানা গেছে বাঁশদহা ইউনিয়নে দুইজন ডিলার আনসার আলি ও খোরশেদ আলম লাবলুর মাধ্যমে প্রায় এক হাজার দুইশ’ কার্ডধারীকে এই চাল দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা সুজিত কুমার মুখার্জী জানান জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৩১ জনের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। বাঁশদহা ইউনিয়নে অনিয়ম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন যাতে কোনো অনিয়ম বা টাকা আদায় না করা হয় সে বিষয়ে চেয়ারম্যানকে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।