প্রেস ব্রিফিংয়ের একাধিক বিষয়ে বারবার মনে করিয়ে দেওয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতি ও পালি বিভাগের ছাত্রী কানিজ ফাতিমার প্রতি কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কানিজ ফাতেমার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্লিজ ডোন্ট ডিকটেক্ট মি’। সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই কথা বলেন।
এর আগে সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার পর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের প্রতিনিধিরা। সরকারের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিশ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে কানিজ ফাতিমাও এসেছিলেন ওই বৈঠকে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে শুরুতেই বক্তব্য দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন—‘বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তার বক্তব্যের সময় সেতুমন্ত্রী ও আহ্বায়কের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কানিজ ফাতিমা। মন্ত্রী যখন সমাপনী বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন কিছু কিছু শব্দ যুক্ত করার জন্য পেছন থেকে মন্ত্রীর উদ্দেশে কথা বলে যাচ্ছিলেন তিনি।
মন্ত্রীর বক্তব্য চলার সময় কানিজ ফাতিমা বলেন, ‘আন্দোলন প্রত্যাহার নয়, স্থগিত বলুন।’ এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি, প্রত্যাহার নয়, স্থগিত। স্থগিতই তো বলেছি।’ কানিজ ফাতেমা আবারও মন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘শুধু আহত নয়, পুলিশের হামলায় আহত’, আরেকবার বলেন, ‘আন্দোলন ৯ মে পর্যন্ত নয়, ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত’ ইত্যাদি।
প্রথমে কানিজ ফাতিমার এই সংশোধনীমূলক বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও কিছুক্ষণ পর কিছুটা ক্ষুব্ধ হন সেতুমন্ত্রী। এ সময় তিনি কানিজ ফাতেমার উদ্দেশে বলেন, ‘প্লিজ ডোন্ট ডিকটেক্ট মি। তোমরা সবাই যখন বক্তব্য দিয়েছ, আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছি। বিশেষ করে, তুমি অনেক বেশি সময় নিয়ে বক্তব্য দিয়েছো। আমরা তো কেউ কিছু বলিনি। শুধু শুনেছি। এ ছাড়া তোমার কনভেনর তো বলেছে, যা বলার। তারপর তুমি কেন বলছো? সভার তো একটা শৃঙ্খলা আছে। তোমরা যখন কথা বলেছো, আমার এতজন কলিগ, এখানে এমপি আছেন, দলের সিনিয়র নেতারা আছেন, একজন মানুষও তো কথা বলেননি। তোমাকে সুযোগ দিয়েছি সবার চেয়ে বেশি। তুমি সুযোগ পেয়েছো বেশি। এখন আমাদের পালা। আমাদের কেউ তো বলছে না। আমি একা বলছি। সো, তুমি আমাকে ডিকটেক্ট করো না।’