ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আট বছরের শিশু হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় পুরো রাজ্য ক্ষোভে ফেটে পড়লেও সেই বিক্ষোভের উত্তাপ পৌঁছায়নি দিল্লিতে।
২০১২ সালের দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনায় পুরো রাজ্য যেভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছিল, আসিফা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কেউ এতটা সরব হয়নি।
কাশ্মীর উপত্যকার গণমাধ্যমগুলো এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে প্রচার করলেও বেশিরভাগ জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয় পায়নি কোনো কভারেজ।
কাশ্মীরের স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ তারা জানুয়ারি মাসেই এই খবরটি প্রচারে দিল্লি অফিসে যোগাযোগ করেছিল। তাদের কাছে এই রোমহর্ষক ঘটনার চাইতে কাশ্মীর উপত্যকায় টিউলিপ বাগান উদ্বোধনের খবরটিকে বেশি জরুরি মনে হয়েছে।
পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি কেন্দ্রীয় নিউজ নেটওয়ার্কগুলো হঠাৎ করেই সংবাদটি প্রচারে উঠেপড়ে লাগে।
প্রশ্ন ওঠে, ঘটনার চার মাস পর হঠাৎ কেন নড়েচড়ে বসল দিল্লি মিডিয়া? হিন্দু ডানপন্থী দলগুলো তাদের কমিউনিটির এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানানোই কি তাদের নজর আকর্ষণের কারণ?
এ বিষয়ে ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদক শেখর গুপ্ত জানান, এ ধরনের আচরণ দিল্লির সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রকৃত চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। যেখানে তারা জাতীয় সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে দ্বিধাবিভক্ত এবং প্রভাবিত। বিশেষত সেনা নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের খবর প্রচারে তারা বরাবরই পক্ষপাতদুষ্ট।
এর পেছনে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। বিশেষ করে হিন্দু ডানপন্থী সংগঠনগুলো এমনকি ক্ষমতাসীন বিজেপির দুজন মন্ত্রী গ্রেপ্তারদের প্রতি সমর্থন জানানোর পর এটি আলোচনায় উঠে আসে।
এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন কম ওঠেনি। তিনি তাঁর টুইট বার্তায় সুবিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েই চুপ করে যান।
এ বিষয়ে সমাজ বিশ্লেষক ড. বিশ্বনাথান বলেন, ‘দিল্লির সংবাদমাধ্যমগুলো প্রতিনিয়ত হত্যা , ধর্ষণ, সহিংসতা, নির্যাতন, লুটপাটের খবর প্রচার করতে করতে গা সওয়া হয়ে গেছে। প্রতিটি খবরেই তারা অতিরঞ্জন কিছু খুঁজতে চায়, যা তাদের নৈতিক বোধকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’