অনলাইন ডেস্ক: ঘৃণিত পরকীয়া সম্পর্কের কারণে ঘটে বিবাহবিচ্ছেদ, খুনোখুনিও হয় অনেক সময়। অনেকে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে না পারলেও, কেউ কেউ পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের হুনোলুলুর যুবক ক্রিস্টোফার সে পথে হাঁটেননি।
তিনি যখন আবিষ্কার করলেন তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত, তখন তিনি সংসারে অশান্তি ডেকে আনেননি। স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি প্রথম থেকেই জানতেন ক্রিস্টোফার। কিন্তু স্ত্রীকে এ নিয়ে প্রশ্নও করেননি, বাধাও দেননি। বিবাহবিচ্ছেদের রাস্তাতেও হাঁটেননি। বরং তিনি রাগে ক্ষোভে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন। তবে যাওয়ার আগে স্ত্রীর প্রেমিক জ্যাককে একটি আবেগঘন চিঠি লিখেছেন।
চিঠির শুরুতেই স্ত্রীর প্রেমিককে ‘প্রিয় জ্যাক’ সম্বোধন করে তিনি লিখেছেন- ‘আমি সবই জেনে গেছি। এই পরিস্থিতিতে আমার পক্ষে এই বাড়িতে আর থাকা সম্ভব নয়। তুমি ভালো করেই জানো, আমার কোনো আর্থিক সংকট নেই। বাকি জীবনটা আমি যদি কিছু নাও করি, তাও ভালোভাবেই চলে যাবে। যাওয়ার আগে আমি আমার সঞ্চিত অর্থ এবং একটি মদের বোতল ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যাচ্ছি না। আমার বাড়ি, গাড়ি সবই রইল।’
ওই চিঠিতে পরের স্ত্রীর সঙ্গ উপভোগ করার অনুরোধ জানিয়ে ক্রিস্টোফার আরো লিখেছেন : ‘আমার সন্তানদের দেখাশোনা করো। ওদের সত্যি বলতে শিখিও। নিজেদের সম্পর্কে মিথ্যা বোলো না। কারণ ওরা ছোট হতে পারে, কিন্তু নির্বোধ নয়। নিশ্চয়ই এটা জানো যে, কিছু ভোগ করলে সেটার জন্য কিছু পরিশ্রমও করতে হয়। আমার বাগানের গাছগুলোর খেয়াল রেখো। পোষা কুকুরগুলোর যত্ন করো। আর আমাদের বাথরুমের কমোডের ঢাকনাটা মাঝেমাঝেই খুলে যায়। অনেকদিন ধরেই ওটা ঠিক করব ভাবছিলাম কিন্তু করা হয়নি। এখন তোমাকেই ওটা সারাতে হবে।’
নিজের স্ত্রী সম্পর্কে ক্রিস্টোফার লেখেন, ‘আমার স্ত্রী সম্পর্কে তোমার আগে থেকেই কিছু জানা উচিত। সে ভালো কেক বানাতে পারে না। সুপার মার্কেটের দক্ষিণ দিকের একটা দোকান থেকে কেক কিনে আনে। এদিকে দাবি করে, ওগুলো ও নিজে বানিয়েছে। আমি সব বুঝেও কিছু বলতাম না। বরং তার প্রশংসাই করতাম। সিদ্ধ করা মাছের পদগুলো ও মোটেও ভালো রাঁধতে পারে না। তবু সেগুলো আমি চেয়ে খেতাম। এমন ভাব করতাম যেন ও-ই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবুর্চি। তোমাকেও এখন এগুলো করতে হবে।’
ক্রিস্টোফার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করতে পারতেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করছি না। সেটা করলে তোমাদের বিয়ে করতে কোনো অসুবিধা থাকত না হয়তো। কিন্তু সেটা করব না কারণ একদিন আমি ফিরে আসব। তুমি তোমার প্রেমিকাকে নিয়ে থেকো। আর এই চিঠিটা যত্ন করে রেখে দিয়ো। কারণ আজ যে তোমার জন্য আমাকে ঠকিয়েছে, সেদিন সে অন্য কারও জন্য তোমাকে ঠকাবে। সেদিনের জন্য অগ্রিম অভিনন্দন জানিয়ে রাখলাম। আপাতত আমি ঘুরতে বের হলাম।’
চিঠিটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দারুণ সাড়া পড়েছে। ক্রিস্টোফারের এই চিঠিকে উপযুক্ত জবাব হিসেবেই দেখছেন পাঠকেরা।