ভিন্ন স্বাদের সংবাদ: যে মানুষটির নাম শুনলেই অনেকে হেসে ফেলে। হাসতে হাসতে অনেকের আজও পেটে খিল ধরে যায়। যার কথা শুনলেই মনে পড়ে উদ্ভট কীর্তিকলাপ আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির কথা। সেই সাথে মনে পড়ে ষড়যন্ত্রের রহস্য উদঘাটন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তার বিভিন্ন চোরাগোপ্তা অন্তর্ঘাতের কথা। সেই গোপাল ভাঁড় বলে কি সত্যিই কেউ ছিলেন?
তার সম্পর্কে বাঙ্গালির আগ্রহের শেষ নেই। যেই মানুষটা এতটা চালাক আর রহস্যময়ী আসলেই মানুষটা কে? এই প্রশ্নটা গোপাল ভাঁড় ভক্তদের মনে সবসময়ই আগ্রহই রয়ে গেছে। গোপাল ভাঁড় কি শুধুই গল্প কাহিনি? না তার কোন বাস্তব চিত্র রয়েছে? এ সম্পর্কে ঐতিহাসিকরাও সঠিক কোন তথ্য দিতে পারে নি।
তবে মানুষের ধারণা আর অনুমান বলে। গোপাল ভাঁড় আসলেও একজন বাস্তবেই ছিলেন। যিনি কি না ছিলেন নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভার একজন পরিহাসকারী। যার কাজ ছিল সভাকে প্রানবন্ত রাখা। এমনটাই ধারণা করেন অনেকে।
আবার অনেকে বলেন, গোপাল নামে কেউ-ই ছিলেন না, কিন্তু কৃষ্ণচন্দ্রের সভায় ছিলেন অতি সুচতুর একাধিক ব্যক্তি। তাঁদের সম্মিলিত রূপই মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে গোপাল ভাঁড় হিসেবে।
তবে এই বিতর্কের মাঝেই নগেন্দ্রনাথ দাস নামের এক ব্যাক্তি নিজেকে গোপাল ভাঁড়ের বংশধর বলে দাবি করে বসেন। এবং ‘নবদ্বীপ-কাহিনী বা মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়’ নামে একটি বইও লিখে ফেলেন তিনি।
এই বইয়ে নগেন্দ্রনাথ দাস দাবি করেন, ‘ভাঁড়’ নয়, গোপালের পদবি ছিল ‘নাই’। তাঁর দাদা ছিলেন ‘আনন্দরাম নাই নামে এক পরম তান্ত্রিক সাধক।’ আর গোপালের বাবা দুলালচন্দ্র নাই, পেশায় ছিলেন নাপিত। তবে, গোপালের বুদ্ধিতে মুগ্ধ হয়েই নদিয়ারাজ তাঁকে সভার অন্যতম রত্ন হিসেবে স্থান দেন। তখন গোপালের উপাধি হয় ‘ভাণ্ডারী’। ‘ভাণ্ডারী’ থেকে অপভ্রংশেই ‘ভাঁড়’ গোপাল ভাঁড়!
সে আরও দাবি করেন, কোনও পুত্রসন্তান না থাকলেও গোপাল ভাঁড়ের একটি মেয়ে ছিল। তাঁর নাম ‘রাধারাণী’। গোপাল ভাঁড়ের বংশ লতিকাও তিনি এই বইয়ে রেখেছেন।
নগেন্দ্রনাথের বক্তব্য, তিনি গোপালের ভাই কল্যাণের উত্তরসূরি। সেই অর্থে গোপালের একমাত্র বংশধর। তবে এই মত যে সব ঐতিহাসিক সন্দেহাতীত ভাবে মেনে নিচ্ছেন, তা বলা যায় না।