অনলাইন ডেস্ক: আগামী ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৮টি হলের সম্মেলন। এ নিয়ে পদপ্রার্থীদের মাঝে তুমুল দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে আড্ডায়, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি, হাকিম চত্বর এমনকি হলে হলে এই আলোচনার কমতি নেই। লবিং, তদবির, নেতাদের বাসায় ধর্ণা দেয়া কিংবা আঞ্চলিকতার দোহাই দিয়েও চলছে হরহামেশা যোগাযোগ। নিজ কর্মীদের নিয়ে শোডাউন দিয়ে ক্যাম্পাসের যেখানে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা।
এদিকে, কারা হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হলগুলোর আগামী দিনের কাণ্ডারী, কেমন তাদের ব্যক্তি ইমেজ, দলের প্রতি কতটুকু আনুগত্যশীলতা এবং মেধাবী, পরিশ্রমী, রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা, নেতাকর্মীদের আস্থাভাজন ও আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথের সক্রিয় থেকেছেন এমন নেতাই খুঁজছেন ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ ক্লিন ইমেজধারীরাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবে। যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে, সেটি হলো গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে রাজপথে কার কি ভূমিকা ছিল, তার ওপর। নির্বাচনের আগে ও পরে রাজপথে কারা ছিল, সে হিসেবেই নতুন কমিটির নেতা নির্বাচিত হবে। এর দ্বারাই প্রকৃত ছাত্রলীগ বেরিয়ে আসবে বলে মনে করে ছাত্রলীগ। তাছাড়া শনাক্ত করা হবে সুযোগসন্ধানী ও নামধারী ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ঢাবির বিভিন্ন হলে যারা সক্রিয় ছিলেন, দলীয় নীতি আদর্শের প্রশ্নে যারা অবিচল, হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা জনপ্রিয় তারাই নেতৃত্বে আসবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়, ক্লিন ইমেজধারী, ছাত্রদের কাছে জনপ্রিয়, ত্যাগী তাদেরকেই কমিটিতে স্থান দেয়া হবে।
হলগুলোর নেতৃত্বে যারা এগিয়ে আছেন
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল : ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েক ডজন নেতা এ হল থেকেই রাজনীতি করে নেতৃত্বে এসেছেন। তাই সমীকরণের হিসাবে সবার ফোকাস সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ইউসুফ উদ্দীন খান অপূর্ব, আবদুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, নাজমুল হোসাইন এবং শেখ সাগর আহমেদ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল : এ হলে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন রাকিবুল হাসান, ফুয়াদ আল মুক্তাদী, আওলাদ খান, এএসএম ছানাউল্লাহ সূর্য, নাঈমুর রহমান, মেহেদী হাসান এবং রুবেল আহমেদ নীরব।
বিজয় একাত্তর হল : ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হলটিতে ছাত্রলীগের মাত্র একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এ হলে এগিয়ে আছেন, আরিফুল ইসলাম শেখ, তৌকির আহমেদ তপু, সালমান ফারসি, মো. বেলাল হোসেন বাপ্পি, ফকির রাসেল আহমেদ এবং সাইফুল ইসলাম জুয়েল, ফারহান ফারুক, নয়ন হাওলাদার।
মাস্টারদা সূর্যসেন হল : মাস্টারদা সূর্যসেন হলে এগিয়ে আছেন মো. হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন, কামাল হোসেন, মো. গোলাম সরোয়ার, তৌহিদ, রুবেল আহমেদ এবং তন্ময়।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল : শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে এগিয়ে আছেন, আসিফ তালুকদার, শাকিল ভূঁইয়া, আনিসুল ইসলাম জুয়েল, নজরুল ইসলাম এবং শোয়ান।
কবি জসিম উদ্দিন হল : কবি জসিম উদ্দিন হলে এগিয়ে আছেন আল মাসুদ সজিব, মো. শাহেদ খান ইয়াকুব, মোহাম্মদ আসিফ জরদার, রবি, মো. রানা খালাসী এবং সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হল : সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এগিয়ে আছেন, তাহসান, আসিফ, মিজানুর রহমান পিকুল এবং ইমরান।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল : হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে এগিয়ে আছেন, ইব্রাহীম রাজু, জহির, ইমরান, তামীম এবং আল আমিন।
স্যার এএফ রহমান হল : স্যার এএফ রহমান হলে এগিয়ে আছেন মাহমুদুল হাসান তুষার, জুয়েল, রাসেল, শাহরিয়ার এবং সুজন।
অমর একুশে হল : অমর একুশে হলে এগিয়ে আছেন, লিমন, ওসমান গনি, তানজীর এবং এহসান।
ফজলুল হক হল : ফজলুল হক হলে এগিয়ে আছেন, শাওন, হাবীব, সিসিম এবং আজিজুল।
শহীদুল্লাহ হল : শহীদুল্লাহ হলে এগিয়ে আছেন কাজল, কবির, তুহিন এবং রকি।
রোকেয়া হল : ছাত্রীদের রোকেয়া হলে এগিয়ে আছেন, সাবরিনা, লিপি আক্তার এবং শ্রাবণী।
শামসুন্নাহার হল : শামসুন্নাহার হলে এগিয়ে আছেন, জিয়াসমিন শান্তা, ইসরাত জাহান মুন এবং নিপু ইসলাম তন্বী।
ফজিলতুন্নেসা মুজিব হল : ফজিলতুন্নেসা মুজিব হলে বেনজীর হোসেন নিশির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরের জুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে ভেঙে দেয়া হয় হল শাখাগুলোর গত কমিটি।