নিজস্ব প্রতিবেদক: আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর গ্রামের কৃতিসন্তান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। শনিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। শনিবার জোহর নামাজের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে মরহুমের প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার জোহর বাদ দরগাহপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে ২য় জানাজা শেষে আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীকে দাফন করা হবে। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ১৯৫০ সালের ৩০ মে আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে এসএসসি ও ১৯৬৮ সালে এইচএসসি পাশ করেন। পরে ১৯৭৩ সনে স্নাতক (সন্মান) এবং ১৯৭৪ সনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সনে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর মুন্সেফ হিসেবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগদান করেন বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী। পরবর্তীতে সাব জজ, ডেপুটি সেক্রেটারি, হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ আগস্ট ২০০৪ সন পর্যন্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ছিলেন। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ল’ কমিশনের প্রথম সেক্রেটারি এবং ১৯৯৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের তৎকালীন আইন উপদেষ্টা প্রয়াত ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমদের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী। দুই বছর পর তিনি স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ২৯ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় হাইকোর্ট বিভাগ থেকে তিনি অবসর নেন। দায়িত্ব পালনকালে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী অনেক আন্তর্জাতিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও কোর্সে অংশগ্রহন করেন। সেই সুবাদে তিনি নেদারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, পাকিস্তান, সুইজারল্যান্ড, ভারত, সিঙ্গাপুর, অস্টেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেন। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর বাবা আব্দুল ওহাব সিদ্দিকী তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় ৩০ ও ৪০ এর দশকে প্রথিতযশা সাংবাদিক, সম্পাদক ও সাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর মাতা বদরুন্নেসা সিদ্দিকী ছিলেন ধর্মপ্রান মানুষ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজন সহ অনেক গুনগাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে আশাশুনি উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট