শ্যামনগর ব্যুরো: শ্যামনগরে অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরিক্ষার পশ্ন ফাঁস হওয়ায় ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন, দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার। গত ২৮ নভেম্বর শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যেকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরিক্ষা শুরু হয়। গত ৩১নভেম্বর প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির অংক পরীক্ষা চলাকালীন এ রউফ মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার নবম শ্রেণির ছাত্র আবু বক্করকে নকল সহ আটক করে। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা শিকার করে এবং তার সহযোগী সারমিন সুলতানাসহ আরো অনেক শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করে। এছাড়া কালিঞ্চি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও নূরনগর আশালতা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল সহ কয়েকজন ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে। নূরনগর আশালতার প্রধান শিক্ষক সূর্য্যকান্ত মন্ডল শিক্ষার্থী আশরাফুলকে জিজ্ঞাসা করিলে সে তার পার্শ্ববর্তী দ্যা নিউ কোচিং সেন্টারের পরিচালক আশরাফুল ইসলামের নিকট থেকে প্রশ্ন পাওয়ার কথা স্বীকার করে। গত ৩ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তারা আশরাফুলের নিকট জিজ্ঞাসা করলে সে জানান, কাঁঠাল বাড়িয়া এ.জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামের শালক সাতক্ষীরা জেলা পুস্তক বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি রোকন বুক ডিপোর মালিক রোকনুজ্জামানের মাধ্যমে তিনি শুধু অংকের প্রশ্ন পেয়েছেন। উপজেলার একাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে বলেন শুধু মাত্র নবম শ্রেণির প্রশ্ন নয়, অধিকাংশ ক্লাসের বার্ষিক পরিক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। একাধিক অভিভাবকরা তিব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান প্রশ্ন ফাঁসের কারনে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা মেধায় মূল্যায়ন থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, আর অমেধাবী শিক্ষার্থীরা মূল্যায়িত হচ্ছে। তারা আরো জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় প্রাইভেট শিক্ষকরা দায়ী। এ ঘটনায় প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব শিক্ষকদের প্রশ্ন করার কথা থাকলেও কিছু কিছু প্রশ্ন শিক্ষকরা করেছে আর বাকি প্রশ্নগুলো শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে নিয়ে পরিক্ষা নেওয়ার কারনে প্রশ্ন পত্র ফাঁস হচ্ছে। শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহি অফিসার আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম জানান, গত ৭ই ডিসেম্বর প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিয়ে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। এঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম ও তারই একাডেমি সুপারভাইজারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রশ্ন পত্র ফাঁসের বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য।
পূর্ববর্তী পোস্ট