অনলাইন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সম্বন্ধে কটূক্তি করার অভিযোগে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতিকে ঢিল মেরে বাংলা ছাড়া করার ফতোয়া দিয়েছেন কলকাতার এক ইমাম।
পশ্চিমবঙ্গের বিধায়ক এবং বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন যে যদি তারা চাইতেন, তাহলে মমতা ব্যানার্জীর ‘চুলের মুঠি ধরে’ দিল্লি থেকে বার করে দিতে পারতেন ।
নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিল ঘোষণার বিরুদ্ধে পর পর কয়েকবার দিল্লিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সে প্রসঙ্গেই বিজেপি নেতা ঐ বক্তব্য দেন।
মি. ঘোষের ওই মন্তব্যেই ক্ষিপ্ত হয়ে কলকাতার বহু পুরনো টিপু সুলতান মসজিদের শাহি ইমাম নুরুর রহমান বরকতি এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে তার ঐ ফতোয়া ঘোষণা করেন।
পরে মি. বরকতিবলেন, “পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী একজন নারী। তার সম্বন্ধে যে কথা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তার বিরুদ্ধেই আমি ফতোয়া জারি করেছি। উনাকে ছোট ছোট পাথর বা ঢিল ছুঁড়ে বাংলার বাইরে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি ওই ফতোয়ায়। নারীদের প্রতি অসম্মানের এটাই সাজা হওয়া উচিত।”
কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদ একটি প্রাচীন মসজিদ এবং সেখানকার শাহী ইমাম মি. বরকতির যথেষ্ট প্রভাব আছে মুসলমান সমাজের ওপরে। তবে তিনি মাঝে মধ্যেই রাজনৈতিক মন্তব্যও করে থাকেন। ঘটনাচক্রে মি. বরকতি যখন এই ফতোয়ার ঘোষণা দেন, সে সময়ে তার পাশে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ইদ্রিস আলি।
“মমতা ব্যানার্জীর মতো একজন ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ, সৎ জীবনযাপন করেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি, তার সম্বন্ধে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে তো প্রশ্ন ওঠে মি. ঘোষ রাজনৈতিক নেতা নাকি গুণ্ডা?” প্রশ্ন শাহী ইমামের।
এই ফতোয়া জারির বিষয়ে অনেকবার চেষ্টা করেও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি মি. দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মি. বরকতির জানা উচিত এখানে শরিয়তের আইন চলে না। পাথর ছুঁড়ে শাস্তি দেওয়ার রীতি পশ্চিমবঙ্গে নেই বা তাঁর অনুগামীদের ক্ষমতা থাকে, তাহলে একটা পাথরও ছুঁড়ে দেখুন না তাঁরা! বাংলার মানুষ ওই পাথরের পরিবর্তে কেউ রসগোল্লা ছুঁড়বে না।”
মি. ভট্টাচার্য বলেন, তার দলের রাজ্য সভাপতি মমতা ব্যানার্জীর সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন, তার রাজনৈতিক বিরোধিতা হতেই পারে, কিন্তু তার জন্য মানুষকে উস্কানি দেওয়া যায়না।
টিপু সুলতান মসজিদের শাহী ইমামের গ্রেপ্তার দাবী করেছেন মি ভট্টাচার্য।