দেশের খবর: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সভাপতিত্বে বৈঠকটি হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব:
১. রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন, নীতি ও আচরণ বন্ধ করতে হবে মিয়ানমারকে। রোহিঙ্গাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
২. মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
৩. জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশের আলোকে ন্যায় বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের মূল ভূমিতে ফিরে যাক।
রোহিঙ্গাদের সাহায্যে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এগিয়ে আসার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে রোববার যুক্তরাষ্ট্র যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে গত বছরের অগাস্ট থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, যাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলেছে জাতিসংঘ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে আইসিসি।
নেদারল্যান্ডসের হেগে গঠিত ওই আদালতের এক আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে যেভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বিতাড়িত করা হয়েছে, তাতে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত হাতে নিয়েছেন আদালত।
এর আগে জাতিসংঘ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যদিও তা প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার সরকার।
জাতিসংঘের আবেদন আমলে নিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর আইসিসি মিয়ানমারের বিচার করার পক্ষে মতামত দিয়ে এক বিবৃতি দিলে সেটিও ‘দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান’ করে মিয়ান সরকার বলেছিল, এ ইস্যুতে আইসিসির হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই।