অনলাইন ডেস্ক: ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে নিজের মৃত্যুর মুহূর্ত নিজেই রেকর্ড করেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। সেদিন কনস্যুলেটে ঢোকার পরই তাকে আটক করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতনের এক পর্যায়ে হত্যা করা হয়।
২ অক্টোবর কনস্যুলেটের প্রবেশের আগে নিজের অ্যাপল ঘড়িতে রেকর্ডিং চালু করেন খাসোগি। প্রবেশের পর তাকে আটক, জিজ্ঞাসাবাদ, নির্যাতন ও সবশেষে হত্যার ঘটনা সবই ওই ঘড়িতে রেকর্ড হয়। পরে সেগুলো তার ব্যবহৃত আইফোন ও তথ্য সংরক্ষণের অনলাইন স্টোরেজ ‘আইক্লাউডে’ জমা হয়। শনিবার তুর্কি দৈনিক ডেইলি সাবাহের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
এসব রেকর্ডিং এখন যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, এই অডিও দিয়ে সহজেই খাসোগির হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করা যাবে। ডেইলি সাবাহের খবরে বলা হয়, কনস্যুলেটে প্রবেশের সময় খাসোগি তার মোবাইল ফোন বাইরে অপেক্ষমাণ বাগদত্তার কাছে রেখে যান। খাসোগি কনস্যুলেট থেকে আর বের না হওয়ায় ওই মোবাইল ফোন নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী।
তুর্কি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের কাছে থাকা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, দূতাবাসে ঢোকার পর কিছুক্ষণ পরই জামালকে সৌদির গোয়েন্দারা খুন করে এবং তারপর তার দেহ টুকরো টুকরো করে লোপাট করে দেয়। অডিও ফুটেজে শোনা গেছে, যে দূতাবাসের ভিতর ঢোকার পর কীভাবে আরবি ভাষায় অনেকে মিলে খাশোগিকে প্রশ্ন করছে। তারপর তাকে অত্যাচার করে খুন করছে। এমনকি অডিও রেকর্ডিং–এ খাশোগিকে মারধরের আওয়াজ, তার আর্তনাদও স্পষ্ট শোনা গেছে।
গত সপ্তাহে তিনি বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কন্স্যুলেটে যান কিন্তু ভবনে প্রবেশের পর তিনি আর বের হন নি। সৌদি সরকার দাবি করছে, ভবন থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন খাশোগি। কিন্তু তুর্কি সরকার বলছে, তাদের হাতে প্রমাণ রয়েছে যে, সৌদি আরব খাশোগিকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সৌদি সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপের মুখে পড়েছে।
এদিকে খাসোগিকে হত্যার আদেশ সৌদি আরব দিয়েছে, এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি। এ অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন সৌদি বিন নাইফ বিন আবদুল আজিজ। খাসোগির গুমের ১১ দিন পর এমন মন্তব্য করেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে রিয়াদ থেকে একটি প্রতিনিধি দল তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় পৌঁছেছে। সৌদি প্রতিনিধি দল যৌথ তদন্তে অংশ নেয়ার জন্য তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।