মোস্তাফিজুর রহমান : আশাশুনি উপজেলা বড়দলে ভূ-গর্ভের স্বর্ণের পুতুল উঠিয়ে দেয়ার নামে ভূয়া কবিরাজ কর্তৃক লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারাতে বসেছে ভাটা শ্রমিকের পরিবারটি। ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪অক্টোবর বড়দল ইউনিয়নের মধ্যম বড়দল এলাকার কারিকর পাড়ার বাশের আলীর স্ত্রীর কবিরাজি চিকিৎসা করানোর জন্য একই ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের শফিকুল ইসলাম সরদারের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগমের স্বরনাপর্ণ হন। চিকিৎসাকালে একাধিকবার তাদের বাড়িতে যাওয়া আসার এক পর্যায়ে কবিরাজ আঞ্জুয়ারা বেগম তাদের জানান আপনাদের বাড়ীর টিউবওয়েলের সন্নিকটে মাটির নিচে সাড়ে ১৯ কেজি পরিমান স্বর্ণ আছে। আপনারা যদি চান আমি তুলে দিতে পারি। বিষয়টি নিয়ে কবিরাজ আঞ্জুয়ারা বেগম ও তার (পরিচয় গোপন রাখা) গুরুবাবা অন্ধকার রাতে বাশের আলীর স্ত্রী, পুত্র শাহীনুর রহমান ও পুত্রবধুকে নিয়ে তাদের টিউবওয়েলের পাশ্ববর্তী স্থানে মাটি খুড়ে একটি স্বর্ণ সাদৃশ্য পুতুল ও একটি ছোট সোনার খন্ড দেখান। যা প্রায় সাড়ে উনিশ কেজি বলে জানান কবিরাজ। এরপর কবিরাজ জানান এ স্বর্ণগুলো পেতে হলে সাতক্ষীরা লাশকাটা ঘরের পাশে শ্মশানের দেবের থানে দেড়লাখ টাকা দিতে হবে। এমতাবস্থায় শাহীনুর রহমানের পরিবার তড়িৎ ধনী হওয়ার লোভে দুষ্ট কবিরাজের মিষ্টি কথায় রাজি হয়ে যান। তার কিছুদিন পরে শাহীনুর রহমান তাদের সহায় সম্ভল বিক্রি, বন্ধক রেখে ও চড়া সুধে মোট দেড়লাখ টাকা সংগ্রহ করে কবিরাজ গুরুবাবার সাথে গিয়ে সাতক্ষীরায় দেবের থানে টাকার পোটলা রেখে আসেন। পূর্ব থেকেই কবিরাজের শর্ত থাকে দেবের থানে টাকা দিয়ে আর পিছু ফেরা যাবে না, ফিরলে তাদের একমাত্র ছেলে মারা যাবে। দেবের থানে টাকা দিয়ে আসার পর থেকে কবিরাজ ও তার সহকারীরা স্বর্ণ তুলে দেওয়া তো দূরের কথা তারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে বলে জানা গেছে। এব্যাপারে খোজ নিয়ে জানতে চাইলে কবিরাজ আঞ্জুয়ারা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করার অনুরোধ জানান এবং প্রতিবেদকের সাথে বসে মিমাংশার প্রস্তাব দেন। এব্যাপারে ভুক্তভোগী শাহীনুর ইসলামের পরিবার জানান আমরা অতি দরিদ্র পরিবারের মানুষ। ভূয়া কবিরাজের মিথ্যা কথা বিশ্বাস করে আমরা আমাদের সহায় সম্ভল বন্ধক বা বিক্রয় করে এখন পথে বসতে বসেছি। সময় শেষ হতেই পাওনাদারদের পাওনা মিটিয়ে দিতে না পারলে হয়তো আত্মহত্যা করা ছাড়া হয়তো আর কোন পথ থাকবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, কবিরাজ পরিচয়ে বহু পরিবারকে নিশ্ব করেছে এই আঞ্জুয়ারা বেগম। তার এ প্রতারনার কৌশলে সহযোগিতা করেন তার স্বামী ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক শফিকুল ইসলাম। এমতাবস্থায় সমাজের শত্রু, সমাজের কলঙ্ক, ভুয়া কবিরাজ আঞ্জুয়ারা বেগম ও তার সহযোগীদের অতি দ্রুত গ্রেফতার পূবর্ক আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সচেতন মহল।
পূর্ববর্তী পোস্ট