অনলাইন ডেস্ক: শীতে সবচেয়ে বড় সমস্যা শিশুদের নিউমোনিয়া। যারা শীতকালে জন্মগ্রহণ করে তাদের ক্ষেত্রে বেশি ভয় হলো নিউমোনিয়া। শিশু বয়সে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ রোগ হলো নিউমোনিয়া। শীতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগার ফলে শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে। তাই শিশুদের অতি যত্নে রাখতে হবে। শীতের মধ্যে ঠাণ্ডা পানীয়, আইসক্রীম খাওয়া এবং গরম কাপড় না পড়ার কারণে নাক, কান, গলার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা থেকে শিশুদের নিউমোনিয়াও হয়ে যেতে পারে। যার ফলে এসময় শিশু ও বয়স্কদের বেশি রোগ ব্যধি লেগেই থাকে। তারপরও এসময় মাম্স, ভাইরাসজনিত জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
নিউমোনিয়া হলো ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রের রোগ। সংক্রমণ এবং এর পরবর্তী প্রদাহ থেকে এ রোগ হয়। নিউমোনিয়ায় জ্বর থাকে। সঙ্গে থাকে কফ এবং শ্বাসকষ্ট। দুই মাসের নিচের শিশুদের শ্বাস নেওয়ার হার মিনিটে ৬০ বারের বেশি, ২ মাস থেকে ১১ মাস ২৯ দিনের শিশুদের মিনিটে ৫০ বার বা তার বেশি এবং ১২ মাস থেকে ৫ বছরের শিশুরা মিনিটে ৪০ বার তা তার বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে তাকে শ্বাসকষ্ট বলা যায়। এর সঙ্গে শিশুর বুকের পাঁজরের নিচের অংশ দেবে গেলে, তা নিউমোনিয়ার লক্ষণ। প্রাথমিকভাবে শিশুর এসব লক্ষণ দেখার পাশাপাশি চিকিৎসক
বুকের এক্স-রে এবং রক্ত পরীক্ষা করে এটি নিশ্চিত হতে পারেন।
কিংবা কোনো পরীক্ষা ছাড়াই শুধু জ্বর, শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি এবং পাঁজরের নিচে দেবে যাওয়া দেখে প্রাথমিকভাবে নিউমোনিয়া শনাক্ত করতে পারেন।
শিশুর নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সর্বপ্রথম বুকের দুধ নিশ্চিত করতে হবে। বায়ুদূষণ শিশুদের নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। মা-বাবা কিংবা অন্যরা শিশুর সামনে ধূমপান করলে শিশুর শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি হয়।
শিশুকে যারা যত্ন করেন, কোলে নেন, খাবার দেন বা আদর করেন সবারই সাবান দিয়ে সঠিক নিয়মে হাত ধোয়া উচিত। এতে শিশুর অন্য রোগের পাশাপাশি নিউমোনিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। বড়দের কারো সর্দি, কাশি বা নিউমোনিয়া হলে শিশুদের সঙ্গ এড়িয়ে চলা ভালো।
শীতের সময় শিশুকে গরম কাপড় পরালেও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমবে। শীতে শিশুকে অযথা বাইরে নেওয়া উচিত নয়। শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে নিয়মিত সব টিকা দেওয়া উচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে, জিঙ্ক গ্রহণ করলে শিশুদের নিউমোনিয়া ১৪ থেকে ২৫ ভাগ কমে যায়। তাই শিশুদের জিঙ্ক ট্যাবলেট বা সিরাপ এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো উচিত। সর্বোপরি শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করাতে হবে।